কালীঘাটে ধর্ষণ ২ নাবালিকাকে, ধৃত নাবালকও

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত সাবালকের নাম গৌর যাদব। বছর তেইশের গৌর এবং ধৃত নাবালকের বিরুদ্ধে ‘প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস’ (পকসো) আইনে মামলা করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

পঞ্চসায়র গণধর্ষণ-কাণ্ডের ১৮ দিনের মাথায় কলকাতায় ফের গণধর্ষণের অভিযোগ। এ বার কালীঘাটে। ১৩ এবং ১৫ বছরের দুই নাবালিকাকে কাজ করানোর নামে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল তিন জনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের দু’জনই নাবালক। বয়স ১৩ এবং ১৪ বছর। পুলিশের বক্তব্য, দুই নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগ পাওয়ার পরে এক নাবালক-সহ দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আর এক নাবালক অভিযুক্ত পলাতক।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত সাবালকের নাম গৌর যাদব। বছর তেইশের গৌর এবং ধৃত নাবালকের বিরুদ্ধে ‘প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস’ (পকসো) আইনে মামলা করা হয়েছে। গৌরকে এ দিন আলিপুরের পকসো আদালতে তোলা হলে তাকে এক দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। নাবালকটিকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের হোমে পাঠানো হয়েছে। পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী মাধবী দত্ত জানান, এক আইনজীবীর মৃত্যুতে এ দিন আদালতে শুনানি হয়নি। গৌরকে তাই এক দিনের জেল হেফাজত দিয়েছেন বিচারক। আজ, শনিবার তাকে ফের ওই আদালতে তোলার কথা।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তেরা কালীঘাট মন্দিরের পূজার উপচারের জন্য আদিগঙ্গায় মাটি কাটে। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ কাজ দেওয়ার নাম করে তারা দুই নাবালিকাকে ডেকে নিয়ে যায়। বলে, মাটি কাটলে ১০ টাকা করে দেওয়া হবে। ওই দুই নাবালিকা কালীঘাট মন্দির সংলগ্ন এলাকায় ভিক্ষা করে। পুলিশের দাবি, নাবালিকারা তাদের কাছে অভিযোগ করেছে, আদিগঙ্গার পাড়ে মা চণ্ডী আশ্রমের কাছে ফাঁকা জায়গায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই তিন জন মদ্যপান করে। এর পর বছর ১৫-এর মেয়েটিকে ধর্ষণ করে গৌর এবং তার সঙ্গী এক নাবালক। অন্য নাবালিকাকে ধর্ষণ করে বছর তেরোর নাবালকটি। ঘটনার পরে দুই নাবালিকা কালীঘাট চত্বরে ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত এক মহিলাকে বিষয়টি জানালে তিনি থানায় যান।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘পুলিশ ওকে রেখে দিলে আমাদের চলবে কী করে?’

কালীঘাট থানার পুলিশ দুই নাবালিকার সঙ্গে কথা বলে। অভিযুক্তেরা কালীঘাট চত্বরেরই বাসিন্দা হওয়ায় তাদের নাম বলতে পেরেছিল নাবালিকারা। রাতেই পুলিশ গৌরকে গ্রেফতার করে। এক তদন্তকারীর দাবি, গৌর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেও বছর তেরোর নাবালকটি তদন্তকারীদের ঘটনাটি বলে। এ দিন সকালে দুই নাবালিকাকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশের বক্তব্য, ধর্ষণ করা হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন। শারীরিক পরীক্ষা হবে ধৃতেরও।

অভিযোগকারিণী এক নাবালিকার মা এ দিন বলেন, ‘‘ওর বাবা আমাদের সঙ্গে থাকে না। লোকের বাড়ি কাজ করি। মেয়েটাকে তাই ভিক্ষা করতে হয়। টাকা দেবে শুনেই ও চলে গিয়েছিল। তার এই ফল?’’

পঞ্চসায়র গণধর্ষণ-কাণ্ডেও অভিযুক্ত হিসেবে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল এক নাবালককে। সাড়ে ১৭ বছরের ওই নাবালককে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করে বিচারের জন্য ইতিমধ্যেই জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে আবেদন করেছে লালবাজার। এ ক্ষেত্রেও কি তা করবে পুলিশ? লালবাজারের এক কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘তদন্ত এগোলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এমন ঘটনায় একের পর এক নাবালকের জড়িয়ে পড়া দেখে আমরা চিন্তিত। আরও সক্রিয় ভাবে সচেতনতা প্রচার চালাতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন