তিলজলা

ছবি তুলে দুষ্কৃতী ধরালেন দুই তরুণী

আক্রান্ত হয়ে ভয়ে পিছিয়ে না গিয়ে ভিন্ রাজ্যের দুই তরুণী রুখে দাঁড়ালেন জনা চারেক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। এক জন মোবাইলে দুষ্কৃতীদের ছবিও তুলে রাখেন। পরে সেই ছবির সূত্র ধরেই ঘটনার মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের এই তৎপরতার প্রশংসা করেছেন ভিন্ রাজ্যের ওই দুই তরুণী।

Advertisement

দেবাশিস দাস

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০০:০৪
Share:

আক্রান্ত হয়ে ভয়ে পিছিয়ে না গিয়ে ভিন্ রাজ্যের দুই তরুণী রুখে দাঁড়ালেন জনা চারেক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। এক জন মোবাইলে দুষ্কৃতীদের ছবিও তুলে রাখেন। পরে সেই ছবির সূত্র ধরেই ঘটনার মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের এই তৎপরতার প্রশংসা করেছেন ভিন্ রাজ্যের ওই দুই তরুণী।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে তিলজলা থানার চৌবাগা রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, মিজোরামের বাসিন্দা ২২ বছরের ওই দুই তরুণী পিকনিক গার্ডেন রোডে দু’টি আলাদা ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। দু’জনে মাঝে মধ্যেই চৌবাগা রোডে এক বন্ধুর দোকানে রাতে খেয়ে একসঙ্গে বাড়ি ফেরেন। মঙ্গলবার রাতেও খাবার খেয়ে দুই বান্ধবী বাড়ি ফেরার জন্য রিকশায় উঠতে যাওয়ার সময়ে জনা চারেক স্থানীয় যুবক এক তরুণীকে লক্ষ করে কটূক্তি করেন। তরুণী প্রতিবাদ করলে, যুবকেরা তাঁকে মারধর করেন বলেও অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আক্রান্ত তরুণীর বান্ধবী বন্ধুকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পরে চিৎকার জুড়ে দেন
এবং মোবাইলে হামলাকারীদের ছবি তুলে নেন।

তরুণীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনা দশেক বাসিন্দা ঘটনাস্থলে হাজির হতেই চম্পট দেয় হামলাকারীরা। আক্রান্ত তরুণী জানান, ঘটনার পরেই তাঁরা তিলজলা থানায় গিয়ে হামলাকারীদের ছবি দিয়ে অভিযোগ করেন। আক্রান্ত তরুণীর বান্ধবী এ দিন জানান, পুলিশের পরামর্শে তরুণীর চিকিৎসার জন্য ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের উদ্দেশে তাঁরা বেরিয়ে পড়েন। প্রায় একই সময়ে মোবাইলে তোলা হামলাকারীদের ছবি নিয়ে পুলিশের একটি দল অভিযানে বেরিয়ে পড়ে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, তল্লাশি চালিয়ে রাতেই ধরা হয় দিলীপ সাউ নামে এক অভিযুক্তকে। বাকি তিন অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তরুণীকে মারধর এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার তিলজলায় ওই তরুণীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তাঁর ডান চোখের উপরে ও নীচে ফুলে রয়েছে। আক্রান্ত তরুণী বলেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে আইজল থেকে কলকাতায় এসেছিলাম পড়াশোনা করতে। কোনও দিন এই রকম অভিজ্ঞতা হয়নি। পুলিশ আমায় অনেক সাহায্য করেছে।’’

নিগ্রহের অভিযোগ। এক মহিলাকে নিগ্রহ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক যুবককে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানা এলাকার গঙ্গারামপুর থেকে তাকে ধরা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা ও যুবক একই গ্রামের বাসিন্দা। এক সময়ে দু’জনের বন্ধুত্বও ছিল। পরে অন্য এক জনের সঙ্গে ওই মহিলার বিয়ে হয়ে যায়। তাঁর মেয়ে এখন কলকাতার স্কুলে পড়ে। থাকে হস্টেলে। সোমবার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতেই মহিলা কলকাতায় আসেন।

মহিলার অভিযোগ, ওই যুবক তাঁকে বহু দিন ধরে বিরক্ত করছেন। সোমবার কলকাতায় আসার পরে ওই যুবক তাঁর পিছু নেন। দুপুরে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডে দেখা হতে দু’জনের বচসা বেধে যায়। মহিলার অভিযোগ, তখন ওই যুবক একটি রুমাল তাঁর মুখে চেপে ধরেন। তাতে তিনি অচেতন মতো হয়ে যান। অভিযোগ, তাঁকে সেই অবস্থাতেই শহিদ মিনারের পাশে নিয়ে গিয়ে থাপ্পড় মারেন ওই যুবক। তার পরে জোর করে সাদা কাগজে সই করিয়ে উধাও হয়ে যান।

মঙ্গলবার সকালে ময়দান থানায় ওই মহিলা অভিযোগ দায়ের করেন। সে দিন রাতেই শেখ মন্তাজ আলি নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তবে, ভরদুপুরে ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের মতো জনবহুল জায়গায় মুখে রুমাল চেপে ধরার ঘটনা কেন কারও নজরে এল না, সেটা বুঝতে পারছে না পুলিশ। ওই এলাকার
সিসিটিভি ফুটেজেও পুলিশ এমন কিছু খুঁজে পায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন