অবরুদ্ধ: মিছিলের জটে থমকে পথ। শনিবার, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। নিজস্ব চিত্র
শুক্রবারের পরে শনিবার। রাজপথে মিছিলের গেরোয় আটকে গিয়ে ফের ভুগতে হল শহরবাসীকে।
শুক্রবার একাধিক রাজনৈতিক মিছিলের জেরে দুপুর থেকেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল মধ্য ও উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশ। শনিবার সকালে বড়বাজার থেকে বার হওয়া দু’টি ধর্মীয় মিছিলের জেরে উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে ছড়িয়ে পড়ল যানজট। নাজেহাল হলেন পথে বেরোনো অসংখ্য মানুষ।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বড়়বাজার থেকে জৈন ধর্মাবলম্বীদের দু’টি বড় মিছিল বেরিয়েছিল। প্রথমটি বড়বাজারের কটন স্ট্রিট, বিধান সরণি, এপিসি রোড, নীরোদবিহারী মল্লিক রোড, বদ্রি দাস টেম্পল স্ট্রিট হয়ে বেলগাছিয়ায় পৌঁছয়। আর দ্বিতীয় মিছিলটি বড়বাজার থেকে বেলা ১২টা নাগাদ যাত্রা শুরু করে। সেটি বৈশাখ লেন, হরিরাম গোয়েন্কা স্ট্রিট, রবীন্দ্র সরণি, অরবিন্দ সরণি, বিধান সরণি, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়, আর জি কর রোড হয়ে বেলগাছিয়ায় পৌঁছয়।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, জৈনদের ওই দু’টি মিছিলে এ দিন প্রায় তিন হাজার মানুষ পা মিলিয়েছেন। স্বভাবতই শহরের একই অংশ দিয়ে দু’টি বড় মিছিল যাওয়ায় নাস্তানাবুদ হতে হয় সাধারণ মানুষকে। কলেজ স্ট্রিট যাওয়ার জন্য শনিবার বিকেল তিনটে নাগাদ শ্যামবাজার থেকে বাসে চেপেছিলেন কলেজ স্ট্রিটের বাসিন্দা সুমন দাস। মিছিলের গেরোয় আটকে গিয়ে সুমনবাবুকে মাঝরাস্তায় বাস থেকে নেমে হেঁটেই কলেজ স্ট্রিটে পৌঁছতে হয়। লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন, এ দিন মিছিলের জন্য উত্তর কলকাতার একাধিক রাস্তায় বেশ কিছু ক্ষণ ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল যান চলাচল। তার মধ্যে রবীন্দ্র সরণি, বিধান সরণি, বিডন স্ট্রিট, অরবিন্দ সরণি, ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ, কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকায় নাজেহাল হতে হয় মানুষকে। অন্য রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক বেশি সময় লেগে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন বড়বাজার থেকে মিছিল শুরু হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা আগে থেকেই ওই এলাকায় মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের জমায়েত শুরু হয়ে যায়। ফলে সকাল দশটা থেকেই বড়বাজারের ওই অংশে তৈরি হয় তীব্র যানজট। শুধু তা-ই নয়, দু’টি মিছিলের গন্তব্য একই জায়গায় (বেলগাছিয়া) হওয়ায় মিছিল শেষ হওয়ার পরে বেলগাছিয়া রোডেও প্রবল যানজট তৈরি হয়। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার পরে দেখা যায়, অনেক যাত্রীই গাড়ি বা বাস থেকে মাঝপথে নেমে হাঁটতে শুরু করেছেন।
লালবাজারের এক কর্তা দাবি করেন, ‘‘দু’টি বড় মিছিলের জন্য উত্তর কলকাতার কিছু রাস্তায় গাড়ি ধীর গতিতে চললেও যানজট ঠেকাতে সেখানে এ দিন পর্যাপ্ত পুলিশকর্মীদের মোতায়েন রাখা হয়েছিল। কয়েকটি রাস্তা সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হলেও গাড়ি অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে কোনও সমস্যা হয়নি।’’