Death

মেয়ের জন্মদিনের পরে অস্বাভাবিক মৃত্যু বৃদ্ধ দম্পতির

মৃত দম্পতির দেহের ময়না-তদন্তের পরে প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, দু’জনেই অত্যধিক মাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘মেয়ের অনেক দূরে স্কুলে পোস্টিং। নিজে কষ্ট করে আমাদের দেখাশোনা করছে। ওর জীবনযন্ত্রণা আমরা সহ্য করতে পারলাম না। চললাম।’

Advertisement

মৃত্যুর আগে সুইসাইড নোটে এ কথা লিখে গিয়েছেন হরিদেবপুরের এক প্রবীণ দম্পতি। বেহালার জেমস লং সরণির একটি ফ্ল্যাট থেকে রবিবার সকালে অচৈতন্য অবস্থায় ওই দম্পতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দম্পতির নাম প্রদ্যোৎ লাহিড়ী (৭৩) ও প্রণতি লাহিড়ী (৬৮)।

মৃত দম্পতির দেহের ময়না-তদন্তের পরে প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, দু’জনেই অত্যধিক মাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। যে কারণে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। এ নিয়ে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত শনিবার ওই দম্পতির একমাত্র মেয়ে, পেশায় স্কুলশিক্ষিকা মধুমিতার জন্মদিন ছিল। রাতে তাঁর জন্মদিন পালন করেছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা। মেয়ের জন্য নিজের হাতে কেক বানিয়েছিলেন প্রণতিদেবী। এর পরে পাশের ঘরে ছেলেকে নিয়ে শুতে চলে যান মধুমিতা। অন্য ঘরে ঘুমোতে যান ওই দম্পতি। পরের দিন, রবিবার সকালে মধুমিতা উঠে মা-বাবাকে ডাকতে গেলে দেখেন, বিছানায় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তাঁরা। তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। দম্পতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী প্রদ্যোৎবাবু বেহালার জেমস লং সরণির একটি আবাসনের দোতলায় একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল তাঁদের কন্যা মধুমিতার। তার পরে প্রায় দু’বছর ধরে তিনি তাঁর সাত বছরের পুত্রসন্তানকে নিয়ে এই ফ্ল্যাটেই থাকেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, সুন্দরবনের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন মধুমিতা। সে জন্য প্রতিদিন তাঁকে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়। মেয়েকে নিকটবর্তী কোনও স্কুলে বদলি করানোর জন্য প্রদ্যোৎবাবু অনেক তদ্বির করেছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ফলে এক দিকে মেয়ের বিবাহবিচ্ছেদ, অন্য দিকে চাকরির জন্য প্রতিদিন দীর্ঘ পথ যাতায়াত— এসব আর সহ্য করতে পারছিলেন না ওই বৃদ্ধ দম্পতি। ফলে মৃত্যুর আগে সুইসাইড নোটে তাঁরা মেয়ের এই জীবনযুদ্ধের যন্ত্রণার কথাই লিখে গিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন