ভাঙচুর চালিয়ে উল্টে দেওয়া হয়েছে অটো। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র।
ব্যস্ত দুপুরে বারাসতের ভিড়ে ঠাসা চাঁপাডালি মোড়। সন্ত্রস্ত পথচারীরা দেখলেন, এক দল মানুষ একে অন্যের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে লোহার রড। দু’পক্ষে শুরু হয়ে গেল তুমুল মারামারি। তাতে মাথা ফেটে রক্তও ঝরল।
অটো এবং টোটোচালকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে মঙ্গলবার বারাসত শহরের বিভিন্ন জায়গায় এমনই দৃশ্যের সাক্ষী রইলেন সাধারণ মানুষ। প্রথমে বচসা, পরে হাতাহাতি গড়ায় ভাঙচুর এবং পুলিশের লাঠি চালানোয়। এ দিনের গোলমালের জেরে তিন জন টোটোচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ বারাসতের হেলাবটতলা এলাকায় এক অটোচালকের সঙ্গে বচসা বাধে এক টোটোচালকের। শুরু হয় হাতাহাতি। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় অটো ও টোটোচালকদের মধ্যে গোলমাল বেধে যায়। হেলাবটতলার পরে ঝামেলা শুরু হয় হরিতলা মোড়ে। সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি শুরু হয়। তবে সংঘর্ষ মারাত্মক আকার নেয় চাঁপাডালি মোড়ে। সেখানে দুই দলের মধ্যে ঝগড়াঝাটি শেষে মারামারির চেহারা নেয়। অভিযোগ, সেই সময়ে লোহার রড দিয়ে এক অটোচালকের মাথায় মারেন এক টোটোচালক। নীলকমল মহলদার নামে ওই অটোচালককে গুরুতর আহত অবস্থায় বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে এলাকার অটোচালকেরা বারাসত থানায় অভিযোগ জানাতে জড়ো হন। এর পরেই শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অটোচালকদের উপরে হামলার খবর ছড়াতে থাকে। কলোনি মোড় এবং চাঁপাডালি মোড়ের সংযোগকারী উড়ালপুলের উপর দিয়ে অসুস্থ স্ত্রীকে ডাক্তার দেখিয়ে ফিরছিলেন এক অটোচালক। অভিযোগ, ওই অটোচালককে মারধর করে অটোটিতেও ভাঙচুর চালায় টোটোচালকেরা। এর পরেই বারাসত থানার পুলিশ গিয়ে সামান্য লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সেখান থেকেই তিন টোটোচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ দিন দুপুরে বারাসত থানায় এক বৈঠকে বসেন অটো ও টোটোচালকদের সংগঠনের নেতারা। বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। যান চলাচল নিয়ে কোনও রকম বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।”
পুলিশ সূত্রে খবর, জেলায় প্রায় সব টোটোই বেআইনি ভাবে চলছে। তাদের কারও লাইসেন্স নেই। দূষণহীন টোটোগুলি নম্বর প্লেট ছাড়াই এত দিন ধরে রাস্তায় বেরোচ্ছিল। তবে সম্প্রতি টোটোর লাইসেন্স দেওয়ার পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। সরকারি নির্দেশে টোটোর লাইসেন্স প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পরিবহণ দফতর।