Sextortion

অচেনা নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল ধরলেই বিপদ! খোয়াতে পারেন টাকা, সতর্ক করল কলকাতা পুলিশ

অজানা কারও সঙ্গে ভিডিয়ো কল করলেই বিপদের মুখে পড়তে পারেন। খোয়াতে পারেন মোটা অঙ্কের টাকা। এ হেন প্রতারণা রুখতে শহরবাসীকে সতর্ক করল লালবাজার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:১১
Share:

অচেনা নম্বর থেকে করা ভিডিয়ো কল রিসিভ করে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকে। প্রতীকী ছবি।

অচেনা নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল এলেই সতর্ক হন। অজানা কারও সঙ্গে ভিডিয়ো কল রিসিভ করলেই বিপদের মুখে পড়তে পারেন। খোয়াতে পারেন লক্ষ লক্ষ টাকা। ইদানীং এই কায়দায় প্রতারণার কারবার চিন্তায় ফেলেছে প্রশাসনকে। এ নিয়ে সমাজমাধ্যমে আবার সতর্ক করল কলকাতা পুলিশ।

Advertisement

এই ধরনের প্রতারণার পোশাকি নাম ‘সেক্সটরশন’। অর্থাৎ, যৌনতার ফাঁদে ফেলে ভয় দেখিয়ে টাকা হাতানো। কী ভাবে এই প্রতারণা হয়? অচেনা নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল করা হয়। সেই ভিডিয়ো কল ধরলেই দেখা যায় ওপারে বিবস্ত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে তরুণী। কিংবা অনেক সময় ল্যাপটপ বা টিভিতে পর্ন ভিডিয়ো চালিয়ে যৌন উত্তজেক মুহূর্ত তৈরির চেষ্টা। এ হেন যৌন আবেদনে সাড়া দিয়ে অনেক পুরুষই বিবস্ত্র হয়ে বা অর্ধনগ্ন হয়ে অচেনা মহিলার সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যৌনতায় মত্ত হচ্ছেন। কিন্তু এই মাদকতার আড়ালেই রয়েছে ভয়ঙ্কর বিপদ। ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিয়ো ফাঁস করে দেওয়া হবে— এই ভয় দেখিয়ে টাকা হাতাচ্ছেন প্রতারকরা। সম্প্রতি এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা অহরহ ঘটছে দেশে।

এই ধরনের প্রতারণা রুখতে শহরবাসীকে সতর্ক করল লালবাজার। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে ফেসবুক পোস্ট করেছে কলকাতা পুলিশ। তাতে শহরবাসীকে সাবধান করে লালবাজার জানিয়েছে, অচেনা নম্বর থেকে করা ভিডিয়ো কল রিসিভ করলেই বিপদ হতে পারে। আবার অনেক সময় সমাজমাধ্যমে চ্যাট করার জন্য অজানা কেউ মেসেজ পাঠান। সেই ‘মেসেজ রিকোয়েস্ট’ গ্রহণ করে অনেকেই চ্যাট শুরু করেন। কিছু দিন চ্যাট করার পর ভিডিয়ো কলের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন ওই অজানা ব্যক্তি বা মহিলা। তার পর অল্পদিনের আলাপে ঘনিষ্ঠ হয়ে ভিডিয়ো কল করেন অনেকে। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এই ভিডিয়ো কলের আড়ালে রয়েছে বিপদ। ওই ভিডিয়ো কলে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি মোবাইলে স্ক্রিন রেকর্ড করে নেন প্রতারকরা। তার পর তা দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতান তাঁরা। এই ফাঁদে পড়ে ঠকেছেন অনেকেই।

Advertisement

এই ফাঁদে পা দিয়ে ২.৬৯ কোটি টাকা খুইয়েছেন গুজরাতের এক ব্যবসায়ী। গত ১০ জানুয়ারি সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ী। গুজরাতের ব্যবসায়ীর মতোই ঠকেছিলেন দিল্লির এক বাসিন্দা। দক্ষিণ দিল্লির বাসিন্দা ৬৯ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করেছিলেন এক অচেনা তরুণী। সেই ফোন রিসিভ করে বিপাকে পড়েন তিনি। পরে ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতানো হয়। কলকাতাতেও এমন প্রতারণার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। ভিডিয়ো কল করে অশালীন ছবি দেখিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে বলে কলকাতার ফুলবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক ব্যক্তি। নারকেলডাঙা থানায় এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাতেও এই প্রতারণার আঁচ পায় পুলিশ।

এ হেন প্রতারণা ঠেকাতে আগেও সতর্ক করেছিল কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার আবার এ নিয়ে শহরবাসীকে সজাগ হতে পরামর্শ দিল তারা। লালবাজারের পরামর্শ, ‘‘সতর্ক হন, সজাগ থাকুন। অজানা নম্বর বা ব্যক্তির কাছ থেকে ভিডিয়ো কল এলে তা সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন