শনিবারও অনলাইন দেখা গিয়েছে বিক্রমকে
লালবাজারের কাছে খাতায়-কলমে তিনি এখন পলাতক। অথচ, ফেসবুকে অনেকেই দেখতে পাচ্ছেন তাঁর নড়াচড়া। তা হলে দু’মাস আগের দুর্ঘটনায় মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুতে অভিযুক্ত বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে পুলিশ ধরছে না কেন?
সোনিকার সুহৃদদের কারও কারও অভিযোগ, শনিবার দুপুরেও ফেসবুকে বিক্রমকে অনলাইন দেখা গিয়েছে। বিক্রমের বন্ধু-তালিকায় রয়েছেন, এমন এক জনের দাবি, চ্যাট লিস্টে বিক্রমের নামের পাশে সবুজ আলো দেখা গিয়েছে। যার অর্থ, তখন অনলাইন ছিলেন তিনি।
লালবাজারের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘বিক্রমের খোঁজ চলছে। এর বেশি কিছু বলা যাবে না।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, গত সপ্তাহেও বিক্রমের খোঁজে কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ঠিক এখনই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতাদের গতিবিধি টের পেতে সোশ্যাল মিডিয়াতেও আড়ি পাতছেন লালবাজারের বিশেষজ্ঞেরা। সোনিকার ঘনিষ্ঠ কারও কারও বক্তব্য, বিক্রম কখন অনলাইন হচ্ছেন, তার ভিত্তিতেও হদিস মেলা সম্ভব।
তবে বিক্রমের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অন্য কেউ তাঁর নাম করে ব্যবহার করছে কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। তাঁদের প্রশ্ন, বিক্রমের অনুপস্থিতির সুযোগে তাঁর অ্যাকাউন্ট কেউ ‘হ্যাক’ করেনি তো?
লালবাজারের কর্তাদের একাংশ বলছেন, কিছু আইনি পরামর্শ মেনে এগোচ্ছে পুলিশ। ঠিক সময়েই বিক্রমকে ধরা হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন তাঁরা। বিক্রম গত সপ্তাহে পুরীতে ছিলেন বলে পুলিশের একাংশের দাবি।
আরও পড়ুন:প্রযোজকের চিন্তা এখন ফেরার টিকিট
তবে পুলিশের কারও কারও মতে, এখন বিক্রমকে ধরার থেকেও জরুরি, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের মামলাটি আরও ভাল ভাবে সাজানো। বিক্রম যে অন্তত ১০৫ কিমি বেগে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, এর আগে তার তথ্যপ্রমাণ গাড়ির বিভিন্ন টেকনিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশ জোগাড় করেছে। এ ছাড়া, বিক্রম যে দুর্ঘটনার রাতে মদ্যপান করেছিলেন, তারও কিছু পারিপার্শ্বিক প্রমাণ ও সাক্ষ্য পুলিশের হাতে এসেছে। গত সপ্তাহেই বিক্রম-সোনিকার পরিচিত আরও দু’জন ওই রাতের ঘটনা নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। এই বিষয়গুলি বিক্রমের বিরুদ্ধে মামলাটি জোরদার করবে বলে পুলিশের দাবি।
তবে বিক্রমের তরফেও ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আর্জি জানানো হয়েছে। শিগগিরই সেই মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা। পুলিশও আটঘাট বেঁধে বিক্রমের জামিনের আবেদন নাকচ করানোর জন্য তৈরি হচ্ছে। তদন্তকারী দলের এক অফিসারের কথায়, ‘‘বিক্রমের বিরুদ্ধে আমাদের হাতে জোরালো তথ্যপ্রমাণ আছে। তাঁর খোঁজে বারবার অভিযান চালানোর বিষয়টিও আমরা আদালতে জানাব। অত সহজে পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়া যাবে না।’’ সোনিকার পরিবারও আপাতত পুলিশে ভরসা রাখছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আশা করি, জুলাইয়ে সোনিকার জন্মদিনের আগেই ভাল কিছু ঘটবে।’’