উড়ালপুল চালু হয়েও যানজট মুক্ত হল না ভিআইপি রোড। বরং অভিযোগ ভিআইপি রোডের যানজটের প্রভাব এখন পড়ছে নিউ টাউন রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাতেও।
আগে যানজটে হাঁসফাঁস করত ভিআইপি রোডের কেষ্টপুর-বাগুইআটি। বাগুইআটি উড়ালপুল চালু হওয়ার পরে এখন ভিআইপি রোডে যানজটের নতুন ঠিকানা কৈখালি-তেঘরিয়া। অভিযোগ, আগে কেষ্টপুরে যানজট থাকলেও নিউ টাউন রোড ধরে দ্রুত বিমানবন্দরে চলে যাওয়া যেত। কিন্তু এখন কৈখালি থেকে এয়ারপোর্ট এক নম্বর গেট পর্যন্ত যানজট হয়ে যাওয়ায় এক দিকে যেমন ভিআইপি রোডের যাত্রীরা আটকে যাচ্ছেন, ঠিক সে রকমই নিউ টাউন রোডের যাত্রীরাও আটকে যাচ্ছেন। ফলে ভিআইপি রোডের যানজট পরিস্থিতি ক্রমশ আরও বেশি জটিল হয়ে উঠছে।
দু’মাস আগে উদ্বোধন হয়েছিল বহু প্রতীক্ষিত বাগুইআটি উড়ালপুলের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটির উদ্বোধন করেছিলেন। কেষ্টপুর থেকে রঘুনাথপুর প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা এই উড়ালপুল চালু হওয়ার পরে দেখা যায় কেষ্টপুর ও বাগুইআটির যানজট একেবারে উধাও। সেই সঙ্গে কেষ্টপুর-বাগুইআটি এলাকায় তিনটি আন্ডারপাস তৈরি হয়ে যাওয়ায় পথচারীদের রাস্তা পেরোনোর সমস্যাও ছিল না। নিত্যযাত্রীদের অভিজ্ঞতায়, আগে যেখানে যানজটের জন্য কেষ্টপুর থেকে বাগুইআটি পেরোতে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যেত, এখন তা পেরোতে পাঁচ মিনিটও লাগছে না।
কিন্তু বাগুইআটি উড়ালপুল যে ভিআইপি রোডের যানজটের সমস্যাকে পুরোপুরি মেটাতে পারেনি, তা উড়ালপুল চালু হওয়ার পরপরই মালুম হতে শুরু করেছে। যানজট স্থানান্তরিত হয়েছে তেঘরিয়া ও কৈখালিতে।
নিত্যযাত্রীরা জানিয়েছেন, কেষ্টপুরের লম্বা যানজটের সেই পরিচিত ছবিটা এখন দেখা যাচ্ছে কৈখালিতে। কারণ এখন গাড়িগুলো কেষ্টপুর উড়ালপুল ও উড়ালপুলের নীচ দিয়ে সোজা চলে আসছে তেঘরিয়ায়। তেঘরিয়া ও কৈখালিতে পারাপারের জন্য কোনও আন্ডারপাস নেই। ফলে তেঘরিয়া ও কৈখালিতে পথচারীদের রাস্তা দিয়ে পার করাতে গিয়ে অনেকক্ষণ ধরে ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে থাকছে গাড়িগুলো। কলকাতা বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের অভিযোগ, আগে তারা ভিআইপি রোডের যানজট এড়াতে নিউ টাউন রোড ধরতেন। এখন তাতে কোনও লাভ হচ্ছে না। কারণ নিউ টাউন রোড ও ভিআইপি রোডের সংযোগস্থল কৈখালিই এখন আসল যানজটের জায়গা। অফিসটাইমে অর্থাৎ সকাল দশটা ও সন্ধ্যাবেলায় দেখা যাচ্ছে, এয়ারপোর্ট এক নম্বর থেকে গাড়ির লম্বা লাইন কৈখালি ছাড়িয়ে কখনও কখনও তেঘরিয়া পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। আবার তেঘরিয়া মোড়েও উড়ালপুল থেকে নামা গাড়ি যানজটে আটকে যাচ্ছে।
সমস্যা যে রয়েছে, তা স্বীকার করেছেন এলাকার বিধায়ক পূর্ণেন্দু বসুও। তিনি বলেন, ‘‘তেঘরিয়া ও কৈখালিতে যত দ্রুত সম্ভব আন্ডারপাস করতে হবে। তা হলেই যানজটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে ভিআইপি রোড। ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতর ওই এলাকায় ভিআইপি রোড চওড়া করার কাজ শুরু করেছে। আন্ডারপাস তৈরির কাজও দ্রুত শুরু হবে।’’
বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসিপি (ট্রাফিক) শিবানী তিওয়ারী বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরে আন্ডারপাস তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কৈখালি ও তেঘরিয়াতে ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ দেওয়া হয়েছে। যত দিন না আন্ডারপাস হচ্ছে, তত দিন অতিরিক্ত পুলিশই যানজট
নিয়ন্ত্রণ করছে।’’