—ফাইল চিত্র।
নির্মীয়মাণ বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পর শাসক দলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল বাম জামানার দিকে। এ বার সেই ঘটনার তদন্তে কলকাতা পুলিশও খতিয়ে দেখছে ওই উড়ালপুলের টেন্ডার প্রক্রিয়া। ২০০৮ সালে বাম জমানাতে ওই উড়ালপুলের কাজের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। যার ভিত্তিতে তা নির্মাণের দায়িত্ব পায় হায়দরাবাদের সংস্থা আইভিআরসিএল।
লালবাজার সূত্রের খবর, সংস্থার বিভিন্ন অফিসে হানা দিয়ে ওই টেন্ডার সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার সঙ্গে কেএমডিএ-র কাছে থাকা নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের দাবি, দুই তরফের নথি খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে বাম আমলে কোন রকম অনিয়ম হয়েছে কি না।
পাশাপাশি, উড়ালপুলের নকশায় কোন রকম বদল হয়েছিল কি না তা জানতে ওই সংস্থার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া নকশা এবং কেএমডিএ-র নকশা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলার পর প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, নকশার হেরফেরের ফলে ওই ঘটনা ঘটতে পারে। লালবাজার সূত্রের খবর, কেএমডিএর কাছে নকশা এবং টেন্ডার সংক্রান্ত নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কেন বাম আমলের টেন্ডার প্রক্রিয়াকে তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে? তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা বিবেকানন্দ উড়ালপুল নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত সব প্রক্রিয়াই খতিয়ে দেখছেন। তাতে যেমন নকশার বিষয়টি রয়েছে তেমনি টেন্ডার প্রক্রিয়াও রয়েছে। আইভিআরসিএল পুরো যোগত্যামান অর্জন করেছিল কি না তা জানার জন্যই মূলত টেন্ডার প্রক্রিয়ার অংশটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে লালবাজারের দাবি।
টেন্ডার প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখা হলেও ওই কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা কেএমডিএ-র আধিকারিকদের এখনও পর্যন্ত চিহ্নিত করতে পারেননি তদন্তকারীরা। লালবাজার সূত্রের খবর, ঘটনার পর থেকে প্রায় ১২ জন কেএমডিএ আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। এমনকী বিবেকানন্দ উড়ালপুলের বিভিন্ন নথিও কেএমডিএ-র কাছ থেকে লালবাজারে আসেনি বলেই সূত্রের খবর। অন্য দিকে, আইভিআরসিএলের সদর দফতরে রবিবার হানা দিয়েছিল লালবাজারের গোয়েন্দারা।
পুলিশ জানায়, সংস্থার পরিচালন সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতায় ডেকে পাঠানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তাঁরা তা অস্বীকার করেছেন। রবিবার রাতে হায়দরাবাদের বানজারা হিলস, বিজয় নগর-সহ বিভিন্ন জায়গাতে পরিচালন সদস্যদের বাড়িতে হানা দেওয়া হলেও তাঁদের খোঁজ মেলেনি বলে লালবাজারের দাবি। তবে সংস্থার কর্পোরেট অফিস পঞ্চবটিতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।