বন্দি: পোষ্যকে নিয়ে সোফাতেই আশ্রয়। বৃহস্পতিবার, রাজারহাটের কাজিয়ালপাড়ায়। ছবি: সৌরভ দত্ত
গভীর রাতে ঘরে জলের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় রাজারহাটের বাসিন্দাদের। মাঝরাত থেকে শুরু হওয়া দুর্ভোগের জেরে এক প্রান্তের বাসিন্দারা বিহিত চেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে অবরোধ করলেন পথ। অন্য প্রান্ত প্রতিকার চেয়ে ছুটল থানায়।
রাজারহাটের সলুয়ার কালীপার্ক বিধাননগর পুরসভার ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। স্থানীয় বাসিন্দা পল্লবী কুণ্ডু বলেন, ‘‘রাতে ঘুম ভেঙে দেখি হু হু করে জল ঢুকছে।’’ দু’নম্বর উপনগরীর বাসিন্দা
পাপিয়া দাস বলেন, ‘‘চার বছর ধরে এমন চলছে। এ বার ঘরে ঘরে কোমর সমান জল। নিকাশি ব্যবস্থা বলে কিছু নেই।’’ এই ক্ষোভেরই প্রতিফলন ঘটে এ দিন। মৃত্তিকা, ঋষি অরবিন্দ কলোনি, কালীপার্কের বাসিন্দারা রাজারহাট রোড অবরোধ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা শবরী মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘শৌচাগারও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে অবরোধ করেছি।’’
বুধবার রাতে ঘুম ভেঙে কাজিয়ালপাড়ায় বাড়িতে নিজেকে জল-বন্দি অবস্থায় পান বৃদ্ধ বাবু বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ওই বৃদ্ধ ও বাড়ির পোষ্য একই সোফার দু’প্রান্তে আশ্রয় নেন। ভোর থেকে জল বার করার কাজ শুরু হয়। কাজিয়ালপাড়া রাজারহাট-বিষ্ণুপুর এক নম্বর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। পঞ্চায়েতের তরফে রঞ্জন দাস বলেন, ‘‘২১১ নম্বর রুটের রাস্তা পূর্ত দফতর উঁচু করায় পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। পঞ্চায়েত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।’’
পূর্ত দফতরের পাশাপাশি রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার আগের বোর্ডের কোর্টে বেহাল নিকাশির দায় ঠেলেছেন
বিধাননগর পুরসভার দুই জনপ্রতিনিধিও। চার নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান শাহনওয়াজ বলেন, ‘‘আগের পুর বোর্ড নিকাশির কথা ভাবেনি। আমরা নতুন করে নিকাশি ব্যবস্থা গড়ছি। পূর্ত দফতর রাস্তা উঁচু করায় জল সরতে সমস্যা হয়েছে।’’ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিকাশির কাজ চলছে। একটু তো সময় দিতেই হবে।’’ পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য বলছেন, ‘‘ওই দুই জায়গায় তো পুকুরের জলও ঘরে ঢুকেছে।’’