দেবদারু ফটকের মণ্ডপে ছাতা মাথায় দিয়ে দর্শনার্থীদের ভিড়। ছবি: অমিত রায়।
বৃষ্টির ভ্রূকুটি অগ্রাহ্য করে রাত জেগে ঠাকুর দেখা চলছে জমিয়ে। নবমীর রাত যত বাড়ছে, ততই কলকাতার মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে আবহাওয়া দফতর তাদের সাম্প্রতিক বুলেটিন দিয়েছে। জানানো হয়েছে, আগামী ২ থেকে ৩ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা-সহ আশপাশের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা।
আবহাওয়া দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, পরবর্তী ২ থেকে ৩ ঘন্টায় ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাগুলিতে কিছু হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি, বৃষ্টির সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়াও। প্রতি ঘণ্টায় হাওয়ার গতি ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মধ্যরাতে বেহালা এবং কালিকাপুরে বৃষ্টি হয়েছে।
হালকা এবং বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও মোটের উপরে খটখটে ছিল পুজোর ক’টা দিন। অষ্টমীর রাতে কলকাতার কিছু অংশে বৃষ্টি হয়েছে। তবে নবমীর দুপুরে উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায় কিছু ক্ষণের জন্য মুষলধারে বৃষ্টি নামায় মনখারাপ হয়ে গিয়েছিল পুজো উদ্যোক্তা থেকে দর্শনার্থীদের। বৃষ্টি অবশ্য বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। আকাশ দেখে ‘দুগ্গা দুগ্গা’ বলে সন্ধ্যা থেকেই প্রতিমা-প্যান্ডেল, আলোকসজ্জা দেখতে বেরিয়ে পড়েছেন কাতারে কাতারে মানুষ। রাত যত বাড়ছে ভিড়ও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।
কারণ, ‘অদ্যই শেষ রজনী।’ অন্য দিকে, হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থিত নিম্নচাপটি ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বেগে উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে এবং ওড়িশার গোপালপুর থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে, পুরী থেকে ৩৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পারাদ্বীপ থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। বুধবার মধ্যরাতেই আরও তীব্র হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে সেটি। এর পর ২ অক্টোবর, দশমীর রাত থেকে ৩ অক্টোবর একাদশীর ভোরের মধ্যে গোপালপুর ও পারাদ্বীপের মধ্য দিয়ে ওড়িশা এবং সংলগ্ন অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। বিশেষত কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে।
নবমীর দিনভর কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতার মান ৯৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৬৯ শতাংশ।