gareden reach

লকডাউনের শহরে ত্রাণ বিলি নিয়ে বোমাবাজি, ইটবৃষ্টি, রণক্ষেত্র গার্ডেনরিচ

স্থানীয়দের দাবি, সংঘর্ষের জেরে ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছে এলাকার বেশ কিছু দোকানে। রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়িতেও ভাঙচুর হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ১৩:০৯
Share:

গার্ডেনরিচে ত্রাণ বিলি নিয়ে সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত।

লকডাউনের মধ্যে ত্রাণ বিলি নিয়ে সংঘর্ষ বন্দর এলাকার গার্ডেনরিচে। দুই গোষ্ঠীই একে অপরকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইট বৃষ্টি করে, বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, সংঘর্ষের জেরে ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছে এলাকার বেশ কিছু দোকানে। রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়িতেও ভাঙচুর হয়। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে সাত জন। ঘটনায় জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘর্ষ। বন্দর এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামস ইকবাল। তিনি প্রয়াত তৃণমূল নেতা মুন্না ইকবালের ছেলে। পাশের ওয়ার্ড ১৩৫। সেখানে কাউন্সিলর তৃণমূলের আখতারি নিজামি। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, আখতারির ছেলে ববি বকলমে মায়ের হয়ে ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

তৃণমূল কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, মুন্না ইকবালের মেয়ে সাবা ইকবাল ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে টিকিট পেতে চান। সূত্রের খবর, দলীয় টিকিট না পেলেও নির্দল হিসাবেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তৈরি সাবা। তাই বেশ কয়েক মাস ধরেই আখতারির ওয়ার্ডে বিভিন্ন ধরনের জনসংযোগমূলক কাজ করে যাচ্ছেন সাবা। তা নিয়ে বেশ কয়েকবার ববি(আখতারির ছেলে) এবং সাবার অনুগামীদের মধ্যে বচসা, ছোটখাটো মারপিট হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা চিকিৎসায় প্রস্তুত মেডিক্যাল, তৈরি ৩০০টি আইসোলেশন বেড

সেই রাজনৈতিক রেষারেষিই মারাত্মক আকার ধারণ করে রবিবার রাতে রামনগর মোড়ে। স্থানীয় সূত্রে খবর, লকডাউনে কাজ কর্মে যেতে না পারা বিভিন্ন পরিবারের জন্য ত্রাণ বিলি করতে নামেন সাবা এবং তাঁর অনুগামীরা। সেই খবর পেয়ে চলে আসেন ববির অনুগামীরা। অভিযোগ, ববির লোকজন সাবাকে ত্রাণ বিলিতে বাধা দেয়। আর সেখান থেকেই শুরু হয়ে যায় সংঘর্ষ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কয়েক মিনিটের মধ্যে দুই পক্ষের কয়েকশো মারমুখী রাজনৈতিক কর্মী রাস্তায় নেমে পড়েন। গার্ডেনরিচ মোড়, রামনগর রোডে শুরু হয়ে যায় ইট বৃষ্টি। ঘটনাস্থলে গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ ছাড়াও, বন্দরের বিভিন্ন থানার বাহিনী এবং ডিভিশনের রিজা্র্ভ ফোর্স পৌঁছয়।

আরও পড়ুন: নিউ আলিপুরে ১৫ করোনা-পজিটিভ রোগীর তথ্য লুকোচ্ছে প্রশাসন! গুজব ছড়িয়ে ধৃত মহিলা

ইতিমধ্যে ইটের সঙ্গে শুরু হয়ে যায় বোমা ছোড়া। বেশ কয়েকজন আহত হন সংঘর্ষে। প্রায় আড়াই-তিন ঘণ্টার চেষ্টায়, কলকাতা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ণ্ত্রণে আসে। কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, মোট সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাবা ইকবালকে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘ আমরা কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছাড়াই সাধারণ মানুষের জন্য খাবার এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের সেই ত্রাণ বিলি করতে বাধা দেন ওখানকার কাউন্সিলরের ছেলে। রীতিমতো আগ্নেযাস্ত্র বোমা নিয়ে তাঁর লোকজন হাজির হয়। এলোপাথাড়ি বোমা ছুঁড়তে থাকে তাঁরা। বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। আমরা গোটা ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছি।” অন্যদিকে আখতারি নিজামি বা তাঁর ছেলেকে যোগাযোগ করা যায়নি এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন