সেই পোড়া ঘর। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
মা-বাবার মাঝখানে ঘুমিয়েছিল বছর দু’য়েকের ছোট্ট মেয়েটি। বিধ্বংসী আগুনে মৃত্যু হল মা-মেয়ের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাবা ভর্তি আর জি কর হাসপাতালে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে, বারাসত-ব্যারাকপুর রোডের কাছে সদরপুরে। তিন জনকেই হাসপাতালে নিয়ে গেলেও সোমবার মৃত্যু হয় দু’জনের। কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঠিক কী ভাবে ঘরে আগুন লাগল তা এ দিন জানা যায়নি। তবে ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা বলে মনে করছে না পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অসাবধানতাবশত আগুন লাগার ঘটনা এটি নয়। আগুন লাগানো হয়েছে। সেই আগুন কে লাগালো, ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা— সবটাই তদন্ত করছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় বাসচালক কুশ ঘোষ রবিবার রাতে কাজ থেকে ফিরে স্ত্রী কাজল ঘোষ (২২) ও ছোট্ট মেয়ে সায়ন্তিকাকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ তাঁদের ঘর থেকে আগুন বেরোতে দেখে ছুটে আসেন পড়শিরা। ওই বাড়িতেই সপরিবার থাকেন কুশের দাদা লব ঘোষ। লব ও অন্যরা মিলে আগুন নিভিয়ে ঘর থেকে তিন জনকে বের করলেও ততক্ষণে অনেকটাই পুড়ে গিয়েছিলেন তিন জন। তাঁদের প্রথমে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় কুশ এবং সায়ন্তিকাকে। সোমবার সেখানেই মৃত্যু হয় সায়ন্তিকার। বারাসত হাসপাতালে মারা যান কাজলদেবী। কুশবাবুর অবস্থাও সঙ্কটজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
লববাবুকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। কল্পনা মণ্ডল নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘হঠাৎই আগুন দেখে ছুটে যাই। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।’’
ঘটনার তদন্তে উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ পৌঁছয়।
কাজলদেবীর মা মণিকা ঘোষ থানায় অভিযোগ করেন, মেয়ে-নাতনিকে চক্রান্ত করে খুন করা হয়েছে। সোমবার রাতেই লব ও তাঁর মাকে আটক করে পুলিশ। মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা ছাড়াও বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এ দিন অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘সব রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই কী হয়েছিল বলা যাবে।’’