বকেয়া টাকা দিতে ডেকে ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ সেলসম্যানকে, ধৃত মহিলা

পুলিশ সূত্রে খবর, নিউ আলিপুরের ‘পি’ ব্লকের বাসিন্দা মধুমন্তী ২৭ জুলাই একটি চিমনি কেনেন। সেই বাবদ তিনি ওই সংস্থাকে চেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা দিলেও তা ‘বাউন্স’ করে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৩
Share:

বহুজাতিক সংস্থার চিমনি কেনার পরে দাম মেটাতে চেয়ে ওই সংস্থার দুই কর্মীকে বাড়িতে ডেকেছিলেন এক মহিলা। অভিযোগ, ঘুমের ওষুধ মেশানো ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে তিনি অচৈতন্য করে দেন এক যুবককে। এই ঘটনায় ওই মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম মধুমন্তী সাহা। বাড়ি নিউ আলিপুরে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, নিউ আলিপুরের ‘পি’ ব্লকের বাসিন্দা মধুমন্তী ২৭ জুলাই একটি চিমনি কেনেন। সেই বাবদ তিনি ওই সংস্থাকে চেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা দিলেও তা ‘বাউন্স’ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, এর পরে সংস্থার তরফে মধুমন্তীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি তাঁদের বিশেষ আমল দিতেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

তদন্তকারীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে মধুমন্তী ওই সংস্থার প্রতিনিধিদের তাঁর নিউ আলিপুরের বাড়িতে বকেয়া টাকা নেওয়ার জন্য আসতে বলেন। সংস্থার দুই প্রতিনিধি সোমনাথ মণ্ডল ও অমিত চক্রবর্তী শুক্রবার দুপুরে এসে মধুমন্তীর মোবাইলে ফোন করেন। তখন তিনি বা়ড়িতে না থাকায় তাঁর মেয়ে ওই দু’জনকে তিনতলায় নিয়ে যান। অভিযোগ, কিছুক্ষণ পরে
মধুমন্তী ফিরলে তাঁদের ঠান্ডা পানীয় দেওয়া হয়। অমিত তা খেলেও সোমনাথ খেতে রাজি হননি। সোমনাথ পুলিশকে জানিয়েছেন, অমিত ওই পানীয় খেয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়েন। তখন তিনি ঘটনাটি অফিসে জানাতে গেলে তাঁর মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। বাড়ি থেকে বেরোতে গেলে মধুমন্তী তাঁকে বেরোতে বাধা দেন। এমনকি তাঁর উপরে আক্রমণের জন্য কয়েকটি কুকুর লেলিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

সোমনাথের দাবি, তিনি কোনওক্রমে মধুমন্তীর বাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে সোজা নিউ আলিপুর থানায় হাজির হন। ঘটনাটি শুনে পুলিশ ওই বাড়ির তিনতলায় গিয়ে দেখে, অমিত মেঝেয় অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছেন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই মহিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। ইতিমধ্যে চিমনি বিক্রয়কারী সংস্থার তরফে মধুমন্তীর বিরুদ্ধে থানায় বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, মধুমন্তী মাসখানেক আগে ওই ফ্ল্যাটে আসেন। আগে তিনি চেতলা থানা এলাকায় থাকতেন। তিনি বিবাহবিচ্ছিন্না, বাড়িতে বৃদ্ধা মা, এক কিশোরী কন্যা ছাড়াও ছ’টি কুকুর, বিড়াল ও টিয়া রয়েছে। শনিবার ওই বাড়িতে গিয়ে দুই পরিচারিকার দেখা মেলে। তাঁদের এক জনের কথায়, ‘‘ঘটনার সময়ে বা়ড়িতে ছিলাম না। মাসখানেক আগে দিদি চিমনি কিনেছিলেন।’’

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, চিমনি বিক্রয়কারী সংস্থার দুই প্রতিনিধিকে ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচৈতন্য করে শ্লীলতাহানির কেস দেওয়ার অভিসন্ধি ছিল ধৃতের। বিষ প্রয়োগ করে আঘাত করার চেষ্টার অভিযোগের ধারায় পুলিশ মধুমন্তীকে গ্রেফতার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন