থানায় এসে বড়বাবুর খোঁজ করছিল এক যুবক। কিন্তু বড়বাবু অর্থাৎ থানার আইসি তখন ব্যস্ত। পুলিশকর্মীরা তা জানাতেই যুবক বলে, ‘‘আসলে আমি আমার স্ত্রীকে খুন করেছি। আমাকে গ্রেফতার করুন।’’ তা শুনেই হকচকিয়ে যায় পুলিশ।
শুক্রবার সকালে সোনারপুর থানার ঘটনা। ওই যুবকের নাম সজল দেবনাথ। পেশায় রাজমিস্ত্রি ওই যুবক সোনারপুরের খুড়িগাছিতে ভাড়া থাকে। সে স্ত্রী পারুলকে গামছার ফাঁস দিয়ে খুন করেছে বলে থানায় কবুল করে।
পুলিশ সজলকে নিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে পারুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তার পরেই সজলকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ত্রিকোণ সম্পর্কের জেরেই স্ত্রীকে খুন করেছে সজল। মাস খানেক আগে আদতে নামখানার বাসিন্দা ওই দম্পতি খুড়িগাছিতে আসে। পুলিশ জানায়, ছোট থেকে পারুলের সঙ্গে সজলের মেলামেশা, তার পর ক্রমে ঘনিষ্ঠতা। কিন্তু বছর আটেক আগে পারুলের সঙ্গে তাঁর এক আত্মীয়ের বিয়ে হয়। তার পরেই সজল গ্রাম ছেড়ে কেরলে কাজ নিয়ে চলে যায়। মাস তিনেক আগে পারুলের স্বামী পিন্টুও ওই তল্লাটে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যান। জেরায় সজল জানায়, পিন্টুকে দেখেই নামখানায় ফিরে সে পারুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মাস দুয়েক আগে পারুলকে বিয়ে করে। কিন্তু পারুলের সঙ্গে পিন্টুর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। পারুল ও পিন্টুর একটি ছয় বছরের মেয়ে রয়েছে।
বাড়ির মালিক নীলিমা পাসোয়ান বলেন, ‘‘পারুল মাঝেমধ্যেই নামখানা চলে যেত। সজলের সঙ্গে ঝগড়া হত খুব। বৃহস্পতিবারও ঝগড়া হয়েছিল।’’ পারুলের নামখানা যাওয়া সজল পছন্দ করছিল না। পুলিশকে সজল জানিয়েছে, এ দিন ফের নামখানা যাচ্ছিল পারুল। সেই জন্যই ফের ঝগড়া বাঁধে। তার পরই সে পারুলকে খুন করে। কিন্তু পুলিশের বক্তব্য, পারুলকে সজল খুব ভালবাসত বলে খুনের পর পালিয়ে না গিয়ে থানায় যায়। আজ, শনিবার সজলকে বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘সজলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।’’