খাবার দিতে না চাওয়ায় প্রথমে বচসা, পরে ধাক্কাধাক্কি। তার জেরেই দোকানের কর্মচারীকে ধাক্কা মেরে উনুনের ডেক্চির ওপরে ফেলে দিলেন এক যুবক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চার দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর বুধবার রাতে মৃত্যু হয় লালন সিং (২৭) নামে ওই কর্মচারীর। রবিবার রাতেই ক্যানিং স্ট্রিট থেকে মহম্মদ জাকির নামে অভিযুক্ত ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। জাকির পেশায় মুটে বলে জানা গিয়েছে। তার নামে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকার এজরা স্ট্রিটের ফুটপাথে ভাতের হোটেল রয়েছে ভিকি সিং নামে এক যুবকের। কাজের জন্য লালন নামে এক যুবককে বছর দেড়েক আগে বিহার থেকে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। রবিবার দুপুরে ফুটপাথে টেবিল-বেঞ্চে বসে মধ্যহ্নভোজন করছিলেন মহম্মদ জাকির। সেই সময়েই ভাতের সঙ্গে রুটিও চান তিনি। কিন্তু সকালে রুটি করা হয় না বলে লালন ওই যুবককে জানালে তা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে যান তিনি। বচসায় জড়িয়ে পড়েন লালনের সঙ্গে। ওই সময়ে জাকির মদ্যপও ছিলেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। এর মধ্যে আচমকাই তিনি ধাক্কা মারেন লালনকে।
টাল সামলাতে না পেরে লালন গিয়ে পড়েন রাস্তার ওপরে উনুনে ফুটন্ত ডেক্চির ওপরে। তারপর ডেক্চিতে ধাক্কা খেয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে মাছভর্তি ফুটন্ত ডেকচি উল্টে পড়ে তাঁর ওপরে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন জাকির। স্থানীয় বাসিন্দারা লালনকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের সমস্ত খরচ চার দিন ধরে চালাচ্ছিলেন দোকান মালিক ভিকিই। বুধবার রাতে লালনের মৃত্যুর পর মর্মাহত এজরা স্ট্রিটের ওই এলাকার স্থানীয় দোকানদাররাও। স্থানীয় আরেক ব্যবসায়ী গুড্ডু সিং বলেন, ‘‘বিহারের বা়ড়িতে একলা মাকে রেখে পেটের তাগিদে কলকাতায় খাটতে এসেছিল লালন। হঠাৎ দুর্ঘটনায় ওদের জীবনটাই শেষ হয়ে গেল।’’
আরও পড়ুন: থানায় ফোঁস, ভয়ে কাঁটা পুলিশ