বাঁশদ্রোণী

প্রকাশ্যে ‘গলায় ফাঁস’ যুবকের

নীচে জড়ো হয়ে চিৎকার করছে লোকজন। সামনের বাড়ির ছাদে জামা খুলে সেটি চিলেকোঠার কাঠে বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়লেন এক যুবক। দরজা তালা বন্ধ থাকায় কেউ পৌঁছতে পারলেন না তাঁর কাছে। ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়লেন যুবক। পরে পুলিশ যখন হাসপাতালে নিয়ে যায় ততক্ষণে অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ভোরে, বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:২৯
Share:

নীচে জড়ো হয়ে চিৎকার করছে লোকজন। সামনের বাড়ির ছাদে জামা খুলে সেটি চিলেকোঠার কাঠে বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়লেন এক যুবক। দরজা তালা বন্ধ থাকায় কেউ পৌঁছতে পারলেন না তাঁর কাছে। ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়লেন যুবক। পরে পুলিশ যখন হাসপাতালে নিয়ে যায় ততক্ষণে অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ভোরে, বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরের ঘটনা।
পুলিশ জানায়, যে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে তার মালিক সমীর দত্তচৌধুরী কর্মসূত্রে সস্ত্রীক চেন্নাইয়ে থাকেন। গড়িয়ার বোড়ালে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনই ফাঁকা বাড়িটি দেখাশোনা করেন। সমীরবাবুর প্রতিবেশী শঙ্কর দাস পুলিশকে জানান, এ দিন ভোর ৪টে নাগাদ ফুল তুলতে বেরোন তিনি। হঠাৎ দেখেন সমীরবাবুর বাড়ির চিলেকোঠায় আলো জ্বলছে। ফাঁকা বাড়িতে কী করে আলো জ্বলছে, কেউ কি বাড়িতে ঢুকেছে, এ সব ভাবতে ভাবতে ওই বাড়ির দিকে এগিয়ে যান তিনি। শঙ্করবাবু জানান, তিনি দেখেন তিন ছায়ামূর্তি চিলেকোঠায় ঘোরাঘুরি করছে। সঙ্গে সঙ্গে আগুপিছু না ভেবে চিৎকার জুড়ে দেন তিনি। চিৎকার শুনেই আশপাশের লোকজনও জড়ো হয়ে যান সেখানে।
স্থানীয়েরা জানান, চেঁচামেচি শুনে এবং লোকজন দেখে ওই যুবকেরা হতচকিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। কোনওক্রমে পাঁচিল ডিঙিয়ে ছুট লাগান দু’জন। কিন্তু এক জন সেখানেই থেকে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আটকে পড়া যুবককে তাঁরা বার বার বেরিয়ে আসতে বলেছিলেন। আশ্বাসও দিয়েছিলেন, ভয়ের কিছু নেই। কেউ তাঁকে মারধর করবে না। কিন্তু সেই আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারেননি ওই যুবক। সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে কার্যত সকলের সামনে তিনি গায়ের জামা খুলে সেটি চিলেকোঠার কাঠে বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘চোখের সামনে দেখলাম, ছেলেটা ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়ল। কিন্তু বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় আমরা কেউ তার কাছে পৌঁছতেই পারিনি।’’

Advertisement

পুলিশ জানায়, সমীরবাবু বাড়ির সামনে গ্রিলের দরজা রয়েছে। তাতে তালা লাগানো ছিল। এর পরে ঘরের দরজা। সেটিও তালাবন্ধ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। ডেকে আনা হয় বাড়ির মালিকের শাশুড়িকে। এর পরেই গ্রিল ও ঘরের তালা খুলে ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশের অনুমান, ফাঁকা বাড়িতে চুরি করতে ঢুকেছিলেন ওই যুবকেরা। স্থানীয়েরাও জানান, চলতি বছরেই পাড়ায় একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। কয়েক বার চোর ধরাও পড়েছে। কিন্তু তাঁরা কখনও আইন নিজের হাতে তুলে নেননি। পুলিশ এসে চোরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গিয়েছে। এ দিনও তাঁরা ওই যুবককে একই আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন