ফুটপাথে পিষ্ট ঘুমন্ত

মাঝরাতে বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। পার্কের সামনে শুয়ে থাকা গণেশ মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি চোখ খুলে দেখেন, ফুটপাথে উঠে আসা একটি গাড়ির চাকায় পিষে গিয়েছে এক যুবক!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০০:১২
Share:

মাঝরাতে বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। পার্কের সামনে শুয়ে থাকা গণেশ মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি চোখ খুলে দেখেন, ফুটপাথে উঠে আসা একটি গাড়ির চাকায় পিষে গিয়েছে এক যুবক! গণেশবাবু যেখানে শুয়েছিলেন, তার থেকে সামান্য দূরেই ঘুমোচ্ছিলেন ওই যুবক। তবে ঘুম জেগে ওঠা ওই ব্যক্তির ঘোর, বিহ্বলতা কাটার আগেই তীব্র গতিতে ব্যাকগিয়ারে পিছিয়ে যায় ঘাতক গাড়িটি। তার পর তল্লাট ছেড়ে বেরিয়ে যায় দ্রুত গতিতে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ বেনিয়াপুকুর এলাকার সুন্দরীমোহন অ্যাভিনিউয়ের ওই ঘটনায় মৃত যুবককে শনিবার শনাক্ত করা গিয়েছে। তাঁর নাম মহম্মদ শাহজাদা (২৪)।

লালবাজারের কর্তাদের একাংশের মত, রাতভর রাস্তায় যতই ট্র্যাফিক পুলিশ থাকুক, এক শ্রেণির চালকের বেপরোয়া ভাব যে কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না, ফের তা প্রমাণ করল এই মৃত্যুর ঘটনা। পুলিশের অনুমান, চালক মত্ত অবস্থায় ছিলেন। ২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতে বিজন সেতুতে এক ফুটপাথবাসীকে গাড়ি নিয়ে পিষে মেরে ফেলে এক যুবক। সে অবশ্য ধরা পড়ে যায়। তবে বৃহস্পতিবারের ঘটনায় গাড়ি বা চালকের এখনও খোঁজ মেলেনি। পুলিশ জেনেছে, শাহজাদার বাড়ি ছিল বিহারের বেগুসরাইয়ে। কলকাতায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন। ফুটপাথেই শুতেন তিনি। ঘটনার পরে প্রথমে তাঁর পরিচয় জানা না গেলেও পরে তাঁর মোবাইল ঘেঁটে কিছু নম্বর মেলে। সেই সূত্রেই তাঁর পরিচয় জানা যায়। শনিবার শাহজাদার স্ত্রী জিনাত খাতুন এসে দেহ শনাক্ত করেন।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শী গণেশ পুলিশকে জানান, শাহজাদা একটি গাছের পাশে শুয়েছিলেন। বাকিরা একটু দূরে। সাদা-ছাই রঙের বড় গাড়িটি তাঁর বুক ও মাথা পিষে দিয়ে ওই গাছের গুঁড়িতে ধাক্কা মারে। পরে পিছিয়ে গিয়ে সেটি সোজা ফিলিপ্‌স মোড়ের দিকে চলে যায়। গাড়ির পুরো নম্বর দেখতে না পেলেও শেষ তিনটি সংখ্যা ‘৪’ ছিল বলে জানান গণেশ। পুলিশের দাবি, এলাকার সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেও গা়ড়িটিকে চিহ্নিত করা যায়নি। ঘটনার তদন্ত করছে ট্র্যাফিক পুলিশের ফেটাল স্কোয়াড। তদন্তকারীরা জানান, শেষে তিনটি ‘৪’ ধরে গাড়িটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাড়ির ধাক্কার দাগ স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন