ফের ‘ঝাঁপ’ মেট্রোয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫২ মিনিট। সবে কালীঘাট স্টেশনে ঢুকছে দমদমগামী এসি-৭ মেট্রোর রেক। মেট্রো সূত্রে খবর, আচমকা প্ল্যাটফর্মের মাঝামাঝি জায়গা থেকে ছুটে এসে সটান মেট্রোর লাইনের মাঝে লাফিয়ে পড়লেন বছর বাইশের এক যুবক। মেট্রোর চালক সর্বশক্তি দিয়ে ব্রেক কষেও ওই দূরত্বের মধ্যে ট্রেন থামাতে পারেননি।
মেট্রো সূত্রে খবর, বাঁ কাঁধে ব্যাগ এবং হাতে মোবাইল ফোন নিয়ে দু’টি ট্র্যাকের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই ওই যুবককে ধাক্কা মারে মেট্রো। মেট্রোর কিছুটা আংশ তাঁর শরীরের উপর দিয়ে পেরিয়ে যাওয়ার পরে ট্রেনটি থামাতে সক্ষম হন চালক। ট্রেনের কিছুটা অংশ তখনও প্ল্যাটফর্মের বাইরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কামরার নীচ থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় মেট্রোকর্মী এবং রেলরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের। অফিসের ব্যস্ত সময়ে ভিড়ের মধ্যে স্টেশন মাস্টার এবং রেলরক্ষী বাহিনীর সদস্যেরা বারবার অনুরোধ করে কোনওমতে যাত্রীদের মেট্রো থেকে নামিয়ে আনেন। প্ল্যাটফর্মে ঢোকা দু’টি কামরার একটি করে দরজা খুলে যাত্রীদের ধীরে ধীরে বার করে এনে ট্রেনটি পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। থার্ড রেলে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অবশেষে ৯টা ২৬ মিনিট নাগাদ প্রায় সংজ্ঞাহীন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় এস এস কে এম হাসপাতালে। তাঁর মাথার পিছনের অংশ ফেটে যাওয়ায় ৪-৫টি সেলাই পড়েছে। সিটি স্ক্যান-সহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে বিকেলের দিকে তাঁকে হাসপাতাল থেক ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর ব্রিজ সংলগ্ন আলিপুর রোডের বাসিন্দা ওই যুবক পার্ক স্ট্রিটের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মোবাইলে কথা বলার সময়ে কোনও কারণে উত্তেজিত হয়ে গিয়ে ওই যুবক মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দেন।
এ দিকে, এই ঘটনার জন্য টালিগঞ্জ থেকে ময়দানের মধ্যে প্রায় মিনিট ৪৫ বন্ধ থাকে মেট্রো চলাচল। যার জেরে অফিসের ব্যস্ত সময়ে রীতিমতো ভোগান্তি হয় নিত্যযাত্রীদের। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “ময়দান থেকে টালিগঞ্জের মধ্যে মেট্রো চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকলেও বাকি অংশে মেট্রো নির্বিঘ্নে চলেছে।” মেট্রো সূত্রে খবর, এ পর্যন্ত ৩২৪ জন মেট্রোয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে ১৬৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।