Murder

দমদমে বাড়ির কাছ থেকেই মিলল যুবকের রক্তাক্ত দেহ

রাস্তা জুড়ে রক্তের দাগ। প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে রক্তের দাগ যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানেই একটি পার্কের পাঁচিলের ধারে মিলল এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ০৪:৫৫
Share:

দেহ পড়ে ছিল এখানেই, দেখাচ্ছেন মৃতের স্ত্রী রুম্পা দাস। (ইনসেটে) নারায়ণ দাস। মঙ্গলবার, পশ্চিম কমলাপুরে। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা জুড়ে রক্তের দাগ। প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে রক্তের দাগ যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানেই একটি পার্কের পাঁচিলের ধারে মিলল এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ। মঙ্গলবার সাতসকালে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় দমদম ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পশ্চিম কমলাপুরে। দমদম থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম নারায়ণ দাস (৩৫)। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই যুবক বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছিলেন বলে ধারণা পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণের মাথার পিছনে গভীর ক্ষত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান তদন্তকারী অফিসারদের। পেশায় টোটোচালক নারায়ণের নাম পুলিশের খাতাতেও রয়েছে। চুরির ঘটনায় এক বার তাঁর নাম জড়িয়েছিল। তবে এ দিনের ঘটনার সঙ্গে সেই ঘটনার কোনও যোগ আছে কি না, তা জানতে পারেনি পুলিশ। নারায়ণকে খুন করা হয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে তারা।

এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ পার্কের ধারে নারায়ণকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন পাশের একটি আবাসনের বাসিন্দারা। তাঁরা এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর সত্যজিৎ পালকে খবর দেন। কিছুটা দূরেই নারায়ণের বাড়ি। কয়েক জন তাঁর স্ত্রী রুম্পা দাসকেও খবর দেন। সত্যজিৎবাবু বলেন, “আমি নেমে দেখি, যেখানে নারায়ণের দেহ পড়ে রয়েছে, সেখান থেকে রক্তের দাগ চলে গিয়েছে রাস্তা বরাবর। হেঁটে গিয়ে দেখি, বেশ কিছুটা দূরে শুরু হয়েছে সেই দাগ। দেখে মনে হল, জখম হওয়ার পরে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিল ও।”

Advertisement

আরও পড়ুন: গাড়িচালক পরিচয়ের আড়ালে টাকা চুরির কারবার

পুলিশ মনে করছে, রাস্তায় কেউ ধারালো কিছু দিয়ে নারায়ণের ঘাড়ে আঘাত করেছিল। বাঁচার জন্য সাহায্য চেয়েও তা না পেয়ে ওই অবস্থাতেই বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। বাড়ির ২০০ মিটার আগে পার্কের ধারে পড়ে যান ওই যুবক। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে আর উঠতে পারেননি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

মৃতের স্ত্রী রুম্পা বলেন, “সোমবার সন্ধ্যায় মেয়েকে নিয়ে এক বার বেরিয়েছিল। পরে মেয়েকে রেখে, খেয়েদেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। বলেছিল, কিছু ক্ষণ পরে ফিরবে। রাতে আর ফেরেনি। মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। ভোরে কয়েক জন খবর দেয়। এসে দেখি, ও পড়ে রয়েছে।” দোষীদের শাস্তি দাবি করে রুম্পার প্রশ্ন, “কী এমন হল যে, একটা মানুষকে মেরে ফেলতে হল?” তিনি বলেন, “তেমন কিছু করে থাকলে তো পুলিশে খবর দিতে পারত। আটকে রেখে আমাদের খবর দিতে পারত। তা না-করে মেরেই ফেলল! আসলে ও হয়তো এমন কিছু দেখে ফেলেছিল, যাতে কেউ কেউ বিপদে পড়তে পারত।”

ঘটনাস্থলের পাশেই জেসপের বন্ধ কারখানা। বিভিন্ন সময়ে রাতের অন্ধকারে সেই কারখানা থেকে যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনা ঘটেছে। একটি চক্র সেখানে সক্রিয়। এই খুনের সঙ্গে সে সবের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন