ঘরে বাড়ছে বিপদ, আতঙ্কে কেষ্টপুর

মঙ্গলবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই এই উদ্যোগ বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় কাউন্সিলরেরা। শুক্রবার পাঁচ ধৃতকে আদালতে তোলা হলে তিন দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৮
Share:

আদালতের পথে ধৃতেরা। —নিজস্ব চিত্র।

কেষ্টপুরের রাস্তায় কোনও তরুণীকে কুড়ি মিনিট অলিগলিতে দৌড়ে বাঁচার পথ খুঁজতে হয়েছে, সে কথা শুনে রীতিমতো শিউরে উঠছেন স্থানীয়েরা।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে অফিস থেকে বা়ড়ি ফেরার সময়ে বাইশ বছরের এক তরুণীর পিছু নেয় একটি সাদা সিডান গাড়ি। পুলিশ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ওই কর্মী এলাকার বিভিন্ন গলির মধ্যে দিয়ে দৌড়ে বাঁচার চেষ্টা করলেও বারবার তাঁর সামনে চলে আসে গাড়িটি। কোনও রকমে আর এক তরুণীর বাড়িতে আশ্রয় মেলায় বিপদ কাটে আদতে অসমের বাসিন্দা ওই তরুণীর।

ঘটনাটি জানাজানি হতেই ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের উদ্বেগ বেড়েছে। বুধবার থেকে ফুটব্রিজের কাছে পুলিশ মোতায়েন করা হলেও নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা কমেনি। এলাকাবাসীর একাংশ জানান, ওই অঞ্চলে একাধিক বাড়িতে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এবং বিমান সংস্থার কর্মীরা ভাড়া থাকেন। অনেকেই কাজ সেরে বেশি রাতে বাড়ি ফেরেন। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন কে, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের ঘনিষ্ঠদের অবশ্য দাবি, মত্ত অবস্থায় থাকার কারণেই ‘ভুল’ করে ফেলেছেন ওই পাঁচ যুবক। তরুণীর সঙ্গে কী করেছেন, তা বুঝতে পারেননি তাঁরা।

Advertisement

ঘটনার পর দিন, বুধবার এলাকার ক্লাব সংগঠন ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাগুইআটি থানার পুলিশ। এলাকায় দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে সজাগ থাকার কথা বলা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বা অন্য কোনও ধরনের অপরাধ সম্পর্কে জানতে পারলেই থানায় জানানোর জন্য প্রয়োজনীয় নম্বর দেওয়া হয়েছে স্থানীয়দের।

মঙ্গলবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই এই উদ্যোগ বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় কাউন্সিলরেরা। শুক্রবার পাঁচ ধৃতকে আদালতে তোলা হলে তিন দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎ মজুমদার নামে যে যুবকের গাড়ি ধাওয়া করেছিল ওই তরুণীকে, তিনি এক সময়ে খবরের কাগজ বিক্রি করলেও ২০১২ সালের পরে চার বন্ধুর সঙ্গে প্রোমোটিংয়ের কাজ শুরু করেন। তখন তাঁরা একই মডেলের চারটে সিডান কিনেছিলেন। এই ঘটনায় আটক গাড়িটি তারই একটি। আর এক ধৃত কিশোর বিশ্বাসের জগৎপুরে মোবাইলের দোকান রয়েছে। এই ঘটনায় বাকি তিন ধৃত অভিষেক দাস, অভিষেক বাচার এবং সজল দাস কী করেন, তা জানাতে পারেননি এলাকার কেউই।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিগত কয়েক মাস ধরে খালের পাশের এলাকাগুলিতে পুলিশের নজরদারির অভাব রয়েছে। পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ এবং বইমেলার মতো বড় অনুষ্ঠান বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় হওয়ায় পুলিশের কাজ বেড়ে গিয়েছে। বিধাননগর অনেক পুলিশকর্মীই এখন বইমেলা নিয়ে ব্যস্ত। তবে পুলিশের দাবি, ব্যস্ততার মধ্যেও নজরদারি কমেনি। বাসিন্দাদের অভিযোগ ঠিক নয়। এ দিন বিধাননগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা জানান, বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন