এ বার ‘জালিয়াতি’ সেনা অফিসারদের অ্যাকাউন্টে

দিন কয়েক আগে এটিএমে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর এক অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট। মেশিনে কার্ড ঢোকানো মাত্রই দেখেন, কার্ড ব্লক। এর দিন দশেক পরে অনলাইনে নিজের অ্যাকাউন্টে তিনি দেখেন, সেখান থেকে দু’দফায় উধাও প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৯
Share:

দিন কয়েক আগে এটিএমে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর এক অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট। মেশিনে কার্ড ঢোকানো মাত্রই দেখেন, কার্ড ব্লক। এর দিন দশেক পরে অনলাইনে নিজের অ্যাকাউন্টে তিনি দেখেন, সেখান থেকে দু’দফায় উধাও প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা।

Advertisement

বিধাননগর (দক্ষিণ) থানায় এ নিয়ে অভিযোগ জানান অভিনন্দন মিত্র নামে ওই ব্যক্তি। পুলিশ জানায়, দেশ জুড়ে বিভিন্ন সেনা অফিসারদের অ্যাকাউন্ট থেকে এ ভাবেই উধাও হচ্ছে টাকা। কলকাতায় অভিনন্দন ছাড়াও এক সেনা চিকিৎসক-সহ অন্তত দু’জনের ক্ষেত্রে এমন ঘটেছে। অভিযোগ দায়ের হয়েছে দিল্লি পুলিশের আর্থিক অপরাধ দমন শাখাতেও।

পুলিশ জানায়, সেনা অফিসারদের জন্য বিশেষ অ্যাকাউন্ট পরিষেবা প্রদান করে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। এ পর্যন্ত হওয়া এমন জালিয়াতির সবই সেনা অ্যাকাউন্টের ঘটনা। পুলিশ জেনেছে, ওই সব ডেবিট কার্ড আমেরিকা-কানাডার এক রিটেল চেন আউটলেটে ব্যবহার করে জিনিস কেনা হয়েছে। অথচ, তখন ওই অফিসারেরা ছিলেন এ দেশে। কার্ডও ছিল তাঁদের সঙ্গেই।

Advertisement

পুলিশ জানায়, কার্ড ব্যবহার চাইলে জালিয়াতদের হাতে কার্ড থাকা দরকার। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, সেনা অফিসারদের অ্যাকাউন্ট ও কার্ডের তথ্য চুরি করে তা দিয়ে ‘ডুপ্লিকেট’ কার্ড তৈরি হচ্ছে। তাঁরা জানান, পুলিশের ভাষায় একে বলা হয় ‘স্কিমিং’। দিন কয়েক আগে লালবাজারের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখা এমন কার্ড জালিয়াতির এক চক্রের চাঁইকে ধরে। চক্রটি রাজস্থানে বসে বিদেশি নাগরিকদের কার্ড জালিয়াতি করে টাকা হাতাচ্ছিল। তাঁদের সন্দেহ, এমনই কোনও চক্র আছে বিদেশে। গোয়েন্দারা জানান, জালিয়াতেরা প্রথমে অ্যাকাউন্ট ও কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নেয়। কম্পিউটারের বিশেষ সফ্টওয়্যারের সাহায্যে তা ফাঁকা কার্ডে ভরলেই তৈরি করা যায় ‘ডুপ্লিকেট’ কার্ড। তা ব্যবহার করলে আসল গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকেই টাকা কাটা হবে।

কিন্তু সেনা অফিসারদের ক্ষেত্রেই এমন কেন? সাধারণত, জালিয়াতেরা অনলাইনে বন্ধুত্ব করে বা ব্যাঙ্কের নামে ভুয়ো এসএমএস পাঠিয়ে তথ্য হাতায়। এখানে তা হয়নি। গোয়েন্দাদের একাংশের সন্দেহ, ব্যাঙ্ক থেকেই সেনা অ্যাকাউন্টের তথ্য বেরিয়ে যাচ্ছে। তা হাতিয়ে চক্র ফেঁদে বসেছে জালিয়াতেরা। অভিনন্দন জানান, ১৬ জুলাই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়। ১৯ জুলাই কার্ড সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ২৬ জুলাই অ্যাকাউন্ট চেক করার আগে পর্যন্ত তিনি কার্ড বন্ধের কথা জানতে পারেননি। জানানো হয়নি টাকা সরানোর তথ্যও। অভিনন্দন বলেন, “ব্যাঙ্কে মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে। প্রতি বার মেসেজ আসত। এ বার কেন এল না, ব্যাঙ্ক জানাতে পারছে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন