এক রাতের খেলার ফল চোর: ২, পুলিশ: ০

এ যেন আক্ষরিক অর্থেই চোর-পুলিশ খেলা! আর সেই খেলায় আপাতত জিত চোরেরই! শুক্রবার রাতে ফের শহরের দু’টি পৃথক এলাকায় বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে দরজার তালা ভেঙে চুরি করে পালাল চোরের দল। প্রথম ঘটনাটি ঘটে বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লির এক ফ্ল্যাটে। দ্বিতীয় চুরিটি হয় কামারহাটির আড়িয়াদহের একটি বাড়িতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০১
Share:

এ যেন আক্ষরিক অর্থেই চোর-পুলিশ খেলা! আর সেই খেলায় আপাতত জিত চোরেরই! শুক্রবার রাতে ফের শহরের দু’টি পৃথক এলাকায় বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে দরজার তালা ভেঙে চুরি করে পালাল চোরের দল। প্রথম ঘটনাটি ঘটে বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লির এক ফ্ল্যাটে। দ্বিতীয় চুরিটি হয় কামারহাটির আড়িয়াদহের একটি বাড়িতে।

Advertisement

বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় চুরি কমাতে পাড়ায় পাড়ায় টহল দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশের দাবি। কিন্তু তারই ফাঁকে গৃহস্থ বাড়িতে ঢুকে চুরি করে পালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে ফ্ল্যাটের মালিক রানা কর্মকার বাড়িতে ছিলেন না। শনিবার ফিরে তিনি দেখেন দরজার তালা ভাঙা, ঘর ও আলমারি লণ্ডভণ্ড। এর পরেই তিনি থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। পূর্ব রেলের কর্মী রানাবাবু জানান, একটি সোনার আংটি, হার এবং কয়েক হাজার টাকা চুরি গিয়েছে। স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে মেয়ের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন রানাবাবু। শুক্রবার নাইট ডিউটি থাকায় মেয়েকে তিনি শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসেন। শনিবার অফিস থেকে ফিরে চুরির ঘটনা টের পান। পুলিশের সন্দেহ, রানাবাবুর নাইটি ডিউটি থাকলে ফ্ল্যাটে কেউ থাকে না এ তথ্য জেনেই দুষ্কৃতীরা হানা দেয়।

এ দিনের ঘটনার পরে এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে ফের সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাস কয়েক আগেই রানাবাবুর ফ্ল্যাটের থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে সর্বার্থ দত্তগুপ্ত নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে চুরির হয়। তখন পুলিশ দাবি করেছিল, অলিগলিতে মোটরসাইকেলে টহল দেওয়া হবে। তার পরেও চোরেদের উপদ্রব কমছে না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়েরা। বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তার দাবি, “অলিগলিতে টহল চলছে। কিন্তু প্রতিটি বাড়িতে আলাদা ভাবে নজরদারি চালানো সম্ভব নয়।” তাঁর পরামর্শ, বাড়ি ফাঁকা থাকলে বাসিন্দারা যেন আলাদা করে থানায় জানান।

Advertisement

শুক্রবারই গভীর রাতে কামারহাটি পুরসভার পি সি ব্যানার্জী লেনে একটি বাড়িতে চুরি হয়। পুলিশ জানায়, গৃহকর্তা অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক। দিন কয়েক আগেই তিনি সস্ত্রীক অস্ট্রেলিয়ায় বড় মেয়ের কাছে বেড়াতে গিয়েছেন। ফলে বাড়িতে অশোকবাবুর ছোট মেয়ে থাকছিলেন। কিন্তু তাঁর শ্বশুরের শরীর খারাপের খবর পেয়ে শুক্রবার তিনিও রানিগঞ্জ যান। ওই রাতেই ঘটনাটি ঘটে। শনিবার সকালে স্থানীয়েরা দেখেন ওই বাড়ির ছাদের দরজা এবং সদর দরজার তালা ভাঙা। তাঁরাই অশোকবাবুর ভাগ্নী অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খবর দেন। পরে পুলিশ পৌঁছে দেখে প্রতিটি ঘরের তালা ভাঙা। পাঁচটি আলমারি ভেঙে সব কিছু লণ্ডভণ্ড করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, কয়েক হাজার টাকা-সহ বেশ কিছু জিনিস উধাও।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিন কয়েক আগেই ওই এলাকায় রাতের অন্ধকারে একটি বাড়িতে কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। পাশাপাশি, রাস্তায় থাকা কয়েকটি গাড়িতে যথেচ্ছ ভাঙচুরও চালানো হয়েছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্ম বৃদ্ধি পেলেও পুলিশি নজরদারিতে যথেষ্ট ফাঁক থেকে গিয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর নবীন ঘোষাল বলেন, “এলাকায় দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্ম বন্ধ করার জন্য রোজ রাতে নিয়ম করে আমরা স্থানীয়েরাও এলাকায় টহল দিই। এই ঘটনা কি করে ঘটল তা পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলেছি।” যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তার কথায়, “প্রতিটি এলাকায় নিয়ম করে টহলদারি চালানো হয়। ওই এলাকাও ব্যতিক্রম নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন