চেকের গায়ে ‘প্লাস্টিক সার্জারি’ করার জন্য ‘অপারেশন থিয়েটার’-এর খোঁজ পেল লালবাজার!
পুলিশ সোমবার জানায়, একটি আন্তঃরাজ্য চক্রকে পটনা থেকে পাকড়াও করেছেন লালবাজারের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার অফিসারেরা। যে চার চাঁইকে ধরা হয়েছে তাদের নাম মহম্মদ কওসর, রাকেশ কুমার, বিবেকানন্দ ঝা ও বিষ্ণুদেও কুমার। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ জানান, এ নিয়ে এই চক্রের ১৬ জন ধরা পড়ল। উদ্ধার হয়েছে একটি চেক জালিয়াতির যন্ত্রও। ঘটনাচক্রে এ দিনই শহর থেকে জাল নোট ছাপানোর একটি যন্ত্র উদ্ধার করেছে এসটিএফ।
পুলিশ সূত্রের খবর, আসল চেক ব্যবহার করেই শহরে জালিয়াতি করা হচ্ছিল। শুধু বদলে যাচ্ছিল চেক নম্বর, আইএফএস কোড, ব্যাঙ্কের শাখার নাম। গোয়েন্দারা বলছেন, অতি-বেগুনি রশ্মির সাহায্যে চেকে থাকা ব্যাঙ্কের লোগোর জলছবি দেখে নেওয়া হত। তার পরে সেই লোগো বাঁচিয়ে বিশেষ কায়দায় ব্লেড দিয়ে ঘষে আসল চেকের নম্বর, ব্যাঙ্কের শাখার নাম-ঠিকানা, আইএফএস কোড, অ্যাকাউন্ট নম্বর, এমআইসিআর কোড মুছে ফেলা হচ্ছিল। তার পরে ফোটোশপের মতো সফটওয়্যারের সাহায্যে নতুন চেক নম্বর ও অন্যান্য খুঁটিনাটি বসানো হত। ট্রেসিং কাগজের সাহায্যে সইও জাল করা হত। সেই জাল চেক দিয়েই টাকা সরিয়ে নেওয়া হত দুষ্কৃতীদের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে।
লালবাজার সূত্রের খবর, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার ওসি সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি দল তদন্তে নামে। প্রথমে দু’জনকে ধরা হয়। তাদের নাম মাফিজুর রহমান ও নিয়াজ আহমেদ। পরে পটনা থেকে ধরা পরে বাকিরা।
কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের ব্যাখ্যা, চেকের সুরক্ষায় ফাঁক থাকায় জালিয়াতি হচ্ছে। গোয়েন্দাপ্রধান জানান, এ নিয়ে আলোচনার জন্য ১০ মার্চ সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে। চেকের সুরক্ষা বিধি আরও কঠোর করার বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।