ঝুঁকির যাত্রা। ছবি: শৌভিক দে।
অলিখিত এক সীমারেখা। যা অতিক্রমের আগেই নেমে পড়তে হয় যাত্রীদের। সীমার এপারে পাঁচ জন। ও পারে গেলেই চার জন যাত্রী।
ভিআইপি রোড ধরে উল্টোডাঙাগামী অটোতে এই দৃশ্য হামেশাই চোখে পড়ে। উল্টোডাঙা আসার আগেই নেমে যান এক জন। অভিযোগ, বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় অটোয় পাঁচ জন এমনকী রাত্রে ছ’জন যাত্রী উঠলেও অসুবিধা নেই। তবে কলকাতা পুলিশের সীমায় ঢুকতেই সাবধান হতে হয়।
আগে বিধাননগর থেকে বেরনোর সময়ে সার্জেন্ট দেখলেই অটো থেকে অতিরিক্ত জন নেমে কিছুটা হেঁটে ফের অটোয় উঠতেন। এখন বিধাননগর থেকে পুলিশের সামনে দিয়েই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে উল্টোডাঙা যান অসংখ্য অটোচালক। অভিযোগ, নজরদারির ফাঁক গলেই বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় অটো অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলে। অটোরাজ বন্ধে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র অটোচালক ও বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশের সঙ্গে মিটিং-এ বলেছিলেন, “বিধাননগর কমিশনারেট এলাকা থেকে অটোর জুলুম ও বেশি যাত্রী নেওয়ার অভিযোগ আসে। এটা বন্ধে পুলিশি নজরদারি বাড়াতে হবে।” নিত্যযাত্রীদের দাবি, সেই নির্দেশ কার্যকরী হয়নি।
বাগুইআটি-উল্টোডাঙাগামী এবং লেকটাউন-উল্টোডাঙাগামী যাত্রীদের অভিযোগ, ভিআইপি রোডের মতো রাস্তায় অটোচালকের ডানদিকে বসা এমনিতেই যথেষ্ট বিপজ্জনক। এক নিত্যযাত্রী জানাচ্ছেন, সম্প্রতি পাঁচ জন যাত্রী নিয়ে ভিআইপি রোডে লেকটাউনের কাছে উল্টে গিয়েছিল একটি অটো। অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনার থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন যাত্রীরা। যাত্রীরা এটাও জানাচ্ছেন, অফিস টাইমে অটোর সংখ্যা যাত্রীর তুলনায় কম থাকে। তাড়াহুড়োয় তাঁরাও ডানদিকে বসেন। অভিযোগ, রাতে সামনে চালক ছাড়াও তিন জন যাত্রী বসেন। এই পথে লেকটাউন ট্রাফিক গার্ড, বাগুইআটি ট্রাফিক গার্ড, কৈখালি ট্রাফিক গার্ড এবং এয়ারপোর্ট ট্রাফিক গার্ডের চোখের সামনে দিয়েই নিরাপদে পার হয়ে যায় অটোগুলি।
বিধাননগরে অটোচালকদের নিয়ন্ত্রণের কোনও প্রচেষ্টাই নেই বলে দাবি যাত্রীদের। অভিযোগ আরও, ভাড়ার তালিকাও অটোয় থাকে না। বিধাননগর জুড়ে অটোর ভাড়া বিন্যাসও বিচিত্র। যেমন সিএ আইল্যান্ড থেকে লালকুঠি মোড় যেতে সাত বা আট টাকা ভাড়া নেন চালকেরা। ফিরতি পথে অন্য ভাড়া। কিছু দিন পুলিশি অভিযানের পরে অটোয় চার জন যাত্রী তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু আবার পাঁচ জন এমনকী ছ’জন যাত্রী নিয়েও অটো চলছে বিধাননগরে। যদিও পুরো অভিযোগ মানতে নারাজ অটো ইউনিয়নগুলির নেতারা। একাংশের দাবি, ফ্লাইং অটোচালকরা বাড়তি ভাড়া নেন। তবে সব সময় এমন হয় না। আবার নেতৃত্বের একাংশ জানান, প্রতি স্ট্যান্ডের চালকদের এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। অধিকাংশ চালকই তা মেনে চলছেন। কেউ বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন বলে অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে বিধাননগর পুলিশের থেকেও সদুত্তর মেলেনি। এক কর্তার কথায়: “নিয়মিত অভিযান চলে। অভিযোগ পেলে পদক্ষেপও করা হয়।”