বর্ষার আগে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে পাশ করে গেল কলকাতা পুরসভা। পাশাপাশি সফল হাওড়াও। টানা বৃষ্টিতেও দুই পুর-এলাকার কোথাও তেমন জল জমেনি।
মঙ্গলবার দুপুরে এক ঘণ্টা টানা বৃষ্টি। তবু নিচু এলাকা ছাড়া কোথাও জল জমেনি তেমন। কলকাতা পুরসভার নিকাশি দফতরের এক আধিকারিক জানান, শহরে এ দিন গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৫ মিলিমিটার। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, এ দিন বেশি বৃষ্টি হয়েছে তপসিয়া ও তিলজলায়। টানা চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে জল দাঁড়ায় রামমন্দিরের কাছে। জল দাঁড়িয়েছিল তিলজলা, তপসিয়া ও পামারবাজারেও। এই সমস্ত এলাকায় জমা জল দ্রুত নেমে যায়। তবে, দুপুরের ঘণ্টাখানেক বাদ দিলে শহরে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়েছে। ফলে, রাস্তার কোথাও জল বেশিক্ষণ আটকে থাকেনি। অন্য দিকে, শহরের সব ক’টি পাম্পও কাজ করেছে বলে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বর্ষার কথা মাথায় রেখেই আগামী বৃহস্পতিবার পুরসভার নিকাশি দফতর ছাড়াও কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্প, কেএমডিএ, সেচ দফতর এবং পূর্ত আধিকারিকরা আলোচনায় বসবেন। বর্ষার সময়ে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে যাতে সমন্বয় থাকে, সেই ব্যাপারেই আলোচনা হবে বৈঠকে। ইতিমধ্যে শহরের বিভিন্ন নর্দমা ও খাল থেকে পলি তোলার কাজ হয়েছে। অনেক জায়গায় সেই কাজ চলছেও।”
অন্য দিকে, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দফায় দফায় হওয়া বৃষ্টিতে হাওড়ার প্রায় ২৪টি জায়গায় জল জমে। যদিও অধিকাংশ জায়গা থেকেই জল দ্রুত নেমে যাওয়ায় স্বস্তিতে বাসিন্দারা। প্রাথমিক সাফল্যে খুশি হাওড়ার পুরসভার কর্তারাও।
মঙ্গলবার হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় বৃষ্টি হয়েছে ৩৫ মিলিমিটারের মতো। দফায় দফায় বৃষ্টিতে উত্তর হাওড়ার ২, ৮ এবং মধ্য হাওড়ার ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৪, ২৫ এবং ৪৩ ওয়ার্ডে বিভিন্ন জায়গায় কোথাও ৬ ইঞ্চি, কোথাও ৩ ইঞ্চি জল দাঁড়ায়। প্রতি বছর বৃষ্টিতে যে সব জায়গায় জল জমে, সেই পঞ্চাননতলা রোড, দেশপ্রাণ শাসমল রোড, কালীপ্রসাদ চক্রবর্তী লেন-সহ মধ্য হাওড়ার ৮টি ওয়ার্ড ভেসে যায়। জল জমে উত্তর হাওড়ার গুহ রোড, বেনারস রোড, আই রোড প্রভৃতি এলাকাতেও। তবে দুপুরে বৃষ্টি থামার পরে অধিকাংশ জায়গা থেকে জল নেমে গিয়েছে।
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, “এটাই সুখবর যে আজ জল দ্রুত নেমে গিয়েছে। তবে অনেক কাজ বাকি। সব করতে গেলে অনেক টাকা ও যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। সময় লাগবে।” পুর-নিকাশি দফতরের মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্রেরও বক্তব্য, “এখনও পর্যন্ত হাওড়ার নিকাশির ৩০ শতাংশ উন্নতি করা গিয়েছে। ৭০ শতাংশ কাজ বাকি। শহরের নিকাশি সংস্কারের কাজ গত ৩০ বছর ধরে হয়নি। এত দ্রুত সব করা সম্ভব নয়। আসন্ন বর্ষায় শহরে জমা জল কত দ্রুত নামানো যায়, সেটাই আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।”
পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে হাওড়ার নিকাশিকে ঢেলে সাজতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুরসভা, রেল, কেএমডব্লিউএসএ এবং কেএমডিএ-কে নিয়ে একটা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গড়ে কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে খারাপ হয়ে পড়ে থাকা কেএমডব্লিউএসএ-র ৮টি পাম্পিং স্টেশনের মেরামতির জন্য রাজ্য সরকার ৭১ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে। নতুন তৃণমূল পুরবোর্ডের দাবি, ওই পাম্পগুলি ঠিক হয়ে গেলে হাওড়া শহরে জল জমার সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে।