কলে এক ফোঁটাও জল নেই। কারণ, রিজার্ভার শুকনো। রিজার্ভার ভরতে পুরসভাকে জলের গাড়িপিছু ৭০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এমনই অভিযোগ কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মেট্রোপলিটন বাইপাসের সিংহবাড়ির পূর্বালোক এলাকার বাসিন্দাদের।
এখানে পুরসভার জল আসে বিগ ডায়ারের মাধ্যমে। ধাপায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের পাইপ বসানোর জন্য ফেব্রুয়ারিতে এই ওয়ার্ডে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়। অভিযোগ, তখন থেকেই জল কম আসছে। সম্প্রতি জল আসা পুরো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাস্তাও সারনো হয়নি।
পূর্বালোকের একটি আবাসনের বাসিন্দা দেবার্ঘ্য মিশ্র বলেন, “না জেনেই যন্ত্র দিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি করায় এই অবস্থা। টেলিফোন ও ইলেট্রিকের কেব্ল, জলের লাইন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা-সবই খারাপ হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি আবাসনে বিদ্যুৎ, টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সাময়িক ভাবে সংযোগ করে কোনও ক্রমে কাজ চলছে।” পুরসভা থেকে গাড়িপিছু ৭০০ টাকা করে জল কিনতে হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা অবনী সামন্তের অভিযোগ, “জলস্তর নেমে যাওয়ায় সাধারণত জুন থেকে পানীয় জলের সমস্যা হয়। এ বছর মার্চ-এপ্রিল থেকেই তা শুরু হয়েছে।” বাসিন্দারা স্থানীয় পুর প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। স্থানীয় পুর প্রতিনিধি সিপিএম-এর রুমকি দাস বলেন, “মুকুন্দপুর, গড়িয়া-সহ গোটা ওয়ার্ডেই রাস্তা খোঁড়া হয়েছে। কোথাও তো জলের লাইনের ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ আসেনি। আসলে পূর্বালোকে দু’টি পাম্পের একটি নষ্ট। অন্যটি যথেষ্ট কমজোরি। তাই এই অবস্থা।” যদিও মুকুন্দপুর এলাকার নয়াবাদের বাসিন্দারা জানান, জল সমস্যা ওয়ার্ডের অন্য জায়গাতেও আছে। কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি বিভাস মাইতি বলেন, “ওই অঞ্চলে জল সরবরাহে কেন সমস্যা হচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।”
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ওই ওয়ার্ডে জলের লাইনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আবারও রাস্তা খুঁড়তে হতে পারে। তাই রাস্তা সারাই হয়নি। জল কেনা প্রসঙ্গে রুমকিদেবীর যুক্তি, কোনও এলাকায় জল সরবরাহ বন্ধ থাকলে পুরসভা বিনা খরচায় জলের গাড়ি পাঠায়। বাসিন্দারা বালতি করে যত খুশি জল নিতে পারেন। কিন্তু রিজার্ভার ভরতে হলে জল পয়সা খরচ করে কিনতে হবে। যদিও পুরসভার জল বিভাগের এক আধিকারিক জানালেন, জল বিভাগের কর্মীরা লিখিত ভাবে যদি জানায় কাজ করতে গিয়ে কোনও লাইনে সমস্যার কারণে জল বন্ধ তা হলেই বিনাখরচে জল সরবরাহ করে পুরসভা। না হলে গাড়িপিছু ৪৫০ টাকা দিতে হবে। এর জন্য বরো অফিসে আবেদন জমা করতে হয়। তবে এখানে কেন ৭০০ টাকা দিতে হচ্ছে? পুরকর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।