তালিকা রাখে না বাস, ভাড়া নিয়ে তাই নিত্য বচসা

নিয়ম অনুযায়ী ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে রাখার কথা সব বাসেই। অথচ অধিকাংশ বাস থেকেই তা উধাও বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। আর তার ফলেই যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে কন্ডাক্টরদের বিবাদ হলে অধিকাংশ সময়েই তার মীমাংসা হচ্ছে না। মোটর ভেহিক্লস অ্যাক্ট অনুযায়ী বাসে ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৫৬
Share:

নিয়ম অনুযায়ী ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে রাখার কথা সব বাসেই। অথচ অধিকাংশ বাস থেকেই তা উধাও বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। আর তার ফলেই যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে কন্ডাক্টরদের বিবাদ হলে অধিকাংশ সময়েই তার মীমাংসা হচ্ছে না।

Advertisement

মোটর ভেহিক্লস অ্যাক্ট অনুযায়ী বাসে ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাগুইআটির বাসিন্দা রাজীব সরকার জানালেন, গড়িয়া-বিবাদী বাগ মিনিবাসে রাজভবন থেকে জীবনদীপ যাওয়ার পথে ভাড়ার তালিকা দেখতে চাইলে কন্ডাক্টর তা দেখাতে পারেননি। অভিযোগ, রাজভবন থেকে জীবনদীপের জন্য কন্ডাক্টর ভাড়া চান ৮ টাকা। অবশ্য রাজীববাবু যখন বলেন রোজ ৬ টাকা ভাড়ায় যান, তখন নিজের ভুল স্বীকার করে তাঁর কাছ থেকে ৬ টাকাই ভাড়া নেন কন্ডাক্টর। এর পরে ভাড়ার তালিকা দেখতে চাইলে কন্ডাক্টর দেখাতে পারেননি বলে অভিযোগ। ওই বাসে তালিকা না থাকায় রাজীববাবু কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে অভিযোগ জানান। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

বাগুইআটির ৪৪ নম্বর বাসে উঠে একই অভিজ্ঞতা অসীম বসুর। ভাড়া নিয়ে কন্ডাক্টরের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ায় তিনি ভাড়ার তালিকা দেখতে চান। তালিকা দেখাতে পারেননি কন্ডাক্টর। অভিযোগ, তিনি সাফ বলে দেন, তালিকা দেখানো যাবে না। বিধাননগর কমিশনারেটে অভিযোগ দায়ের হয়।

Advertisement

মোটর ভেহিক্লসের রিজিওনাল ট্রাফিক অথরিটির আধিকারিকেরা জানান, ভাড়ার তালিকা আরটিএ অনুমদিত। বাসে তা ঝুলিয়ে রাখাটা বাধ্যতামূলক। মোটর ভেহিক্লসের কর্তা উজ্জ্বল সেনগুপ্ত বলেন, “বাসের পারমিট দিতে যে সব শর্ত থাকে, সেগুলির মধ্যে ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে রাখার কথা আছে। তালিকা না রাখা অপরাধ।” নিত্যযাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে দেখা যাচ্ছে, এই শর্ত এখন শহরের অনেক বেসরকারি বাসই মানছে না। এমনকী, ভাড়া নিয়ে কন্ডাক্টরের সঙ্গে বিরোধ মেটাতে তালিকা চাইলে তা দেখাতে সরাসরি অস্বীকার করছেন তাঁরা।

বিরাটী থেকে বাবুঘাটগামী ২৩৭ নম্বর বাসযাত্রীদের অভিযোগ, মাস কয়েক আগেও দেখা যেত ভাড়ার তালিকা কাচ দিয়ে বাঁধিয়ে বাসের এমন জায়গায় ঝুলিয়ে রাখা হয় যাতে তা সকলের চোখে পড়ে। সেই তালিকা এখন উধাও। একই অভিযোগ, ৩০সি, ৯১এ, ৪৫ নম্বর বাসের ক্ষেত্রেও। নিত্যযাত্রীরা জানাচ্ছেন, তালিকা নেই কেন জানতে চাইলে কন্ডাক্টরেরা বলছেন, বাস বদল করা হবে তাই চার্ট খুলে রাখা হয়েছে। কেউ বলছেন, ভাড়া নিয়ে ঝগড়ার সময় তালিকা ছিঁড়ে ফেলেছেন যাত্রীরাই। বেশি জোর করলে অনেক কন্ডাক্টর নিমরাজি হয়ে পকেট থেকে তালিকা বার করেন।

প্রশ্ন উঠেছে, নিয়ম থাকা সত্ত্বেও তালিকা ঝুলিয়ে রাখা হবে না কেন? এক নিত্যযাত্রীর অভিযোগ, যাঁরা রোজ নির্দিষ্ট পথে যান, তারা ভাড়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। ভাড়া না জানলেই সমস্যা বেশি হয়। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে বাগুইআটি-হাওড়ার ৪৪ নম্বর বাস রুটের স্টার্টার সোমনাথ মজুমদার বলেন, “কাচ দিয়ে বাঁধানো ভাড়ার তালিকা অনেক সময়ে ভেঙে যায়। তবে তালিকা বাসে থাকে। দেখতে চাইলেই দেখানো হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন