ফের শহরে ছিনতাইবাজদের দাপট। বৃহস্পতিবারের শহর সাক্ষী থাকল দু’টি ছিনতাইয়ের ঘটনার। প্রথমটি ঘটে যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ে, দ্বিতীয়টি বি টি রোডে।
পুলিশ জানায়, এ দিন শোভাবাজার স্ট্রিটের এক মহিলা যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ে প্রাতর্ভ্রমণে যান। মহিলা জানান, তখনই এক দুষ্কৃতী মোটরবাইকে এসে তাঁর গলার হার ছিনতাই করে পালায়। শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এ দিকে, দুপুরে ব্যাঙ্ক থেকে কয়েক হাজার টাকা তুলে কাশীপুরে বাড়িতে ফিরছিলেন পিয়ালি দত্ত নামে এক মহিলা। অভিযোগ, বি টি রোডে দুই মোটরবাইক আরোহী তাঁর হাত থেকে টাকার ব্যাগ ছিনতাই করে সিঁথি মোড়ের দিকে পালায়। পিয়ালি জানান, তিনি পরিবারের এক সদস্যের পেনশনের টাকা তুলে ফিরছিলেন। বাইক আরোহীরা আসে পিছন থেকে। তাদের মাথা হেলমেটে ঢাকা ছিল বলে জেনেছে পুলিশ।
লালবাজার সূত্রে খবর, এ নিয়ে গত দু’মাসে শহরে ৪০টি ছিনতাই হয়েছে। রবিবার রাতেই বৈষ্ণবঘাটা রোডে এক বৃদ্ধার হার নিয়ে পালায় মোটরবাইক-আরোহী ছিনতাইবাজেরা। পুলিশের দাবি, কয়েকটি ঘটনায় অপরাধী ধরা পড়েছে। তা সত্ত্বেও লাগাতার ছিনতাইয়ে লাগাম টানতে সফল হয়নি পুলিশ।
বছর দুই আগে কলকাতার নানা প্রান্তে মোটরবাইক-আরোহী ছিনতাইবাজদের দাপট বেড়েছিল। ঢাকুরিয়া ও কসবায় ছিনতাই করতে এসে গুলিও চালায় তারা। লালবাজারের একাংশের দাবি, তখন কিছু ধরপাকড়ের পর ছিনতাইয়ের ঘটনায় লাগাম টানা গিয়েছিল।
কিন্তু সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের কয়েক জন সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। তারাই সাম্প্রতিক ছিনতাইয়ে জড়িত কি না, দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, শহরের বাইরের দুষ্কৃতীরাও এসে ছিনতাই করছে।
ফলে চট্ করে তাদের নাগাল পাচ্ছে না পুলিশ।
লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি হরিদেবপুর থেকে গাঁজা-সহ তিন জনকে ধরা হয়। পুলিশের সন্দেহ, তারা ছিনতাইয়ের ঘটনায় যুক্ত। এক গোয়েন্দাকর্তা বলেন, “ওই তিন জন অন্তত পাঁচটি ছিনতাইয়ে জড়িত। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”
পুলিশের একাংশ জানাচ্ছেন, সামনেই পুজো। এই সময়ে ছিনতাই, কেপমারি রুখতে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়। জুলাইয়ে পর পর ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলিকে গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। তাঁরা জানান, এই সময়ে ধরপাকড় করে দুষ্কৃতীদের হাজতে ঢোকাতে পারলে পুজোয় অনেকটাই চিন্তামুক্ত থাকতে পারবেন পুলিশকর্তারা।
কিন্তু আদৌ তা হবে কি?
প্রশ্ন সেখানেই।