দমদম মেট্রো স্টেশনের সামনে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
শহরতলির দূর-দূরান্ত থেকে আসায় না জেনে চেন টেনে দিচ্ছেন কেউ কেউ। ফলে আটকে যাচ্ছিল মেট্রো। অনেকে আবার দরজাতে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকায় বারবার আটকে গিয়েছে দরজা। সব মিলিয়ে রবিবার দুপুর থেকে ভিড়ের চাপে বারবার থমকে গিয়েছে মেট্রো। ফলে মহাপঞ্চমীতেই শুরুতেই ভিড়ের চাপে বিপর্যস্ত মেট্রো পরিষেবা।
কামরার মধ্যে যখন এই অবস্থা, তখন স্টেশনগুলির বাইরে তো দুপুর থেকেই হাজারে হাজারে মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে টিকিটের অপেক্ষায়। সকলেই গন্তব্য কালীঘাট। সেখান থেকে যাবেন সবাই দেশপ্রিয় পার্ক। ৫৫ ফুটের দুর্গা দর্শনে।
পুজোর শুরু আগেই যে এমন ভিড়ের ঢল নামবে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। কামরার মধ্যে ভিড়ের ঠেলায় প্রায় চিড়েচ্যাপ্টা হয়েছেন দর্শনার্থীরা। বেশির ভাগ যাত্রীই তাঁদের গন্তব্যে নামতেই পারেননি। আবার অনেক যাত্রী ট্রেনের কামরায় পা-টাই রাখতে পারেননি। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেছেন স্টেশনেই। ভিড়ের ঢেউয়ের বেশিটা অবশ্য আছড়ে পড়েছে কালীঘাট স্টেশনে। এক সময়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ওই সময় ট্রেনের দরজা বন্ধ করতে আরপিএফ কর্মীদের বারবার বাইরে থেকে যাত্রীদের ঠেলে কামরায় ঢুকিয়ে দিতেও দেখা গিয়েছে।
মেট্রোর কর্তারা জানিয়েছেন, পুজোয় সপ্তমী থেকে অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু, আচমকা পঞ্চমী থেকেই পুজোর ভিড়ে শুরু হয়ে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল ব্যবস্থাটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কারণ, ভিড়ের চাপ সামলাতে বিভিন্ন স্টেশনে সময়মতো কামরার গেট বন্ধ করতে পারেননি মোটরম্যানেরা। ফলে বিভিন্ন স্টেশনে অতিরিক্ত সময় ধরে ট্রেন দাঁড়িয়ে থেকেছে। আর তাতেই পাকিয়েছে গোলমাল। এ দিন একটি ট্রেন আটকে যেতেই পিছন পিছন সারি দিয়ে পর পর ট্রেন আটকে গিয়েছে। ফলে ফিরতি ট্রেনও সময় মতো হাজির হতে পারেনি। সুড়ঙ্গের ভিতরে যখন এই চেহারা, তখন বাইরের অবস্থাও করুণ। দমদম বা কবি সুভাষ-সহ অন্যান্য স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের লাইন বাড়তে বাড়তে উপরে রাস্তায় চলে এসেছে। দমদমে তো পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেন থেকে আসা অনেক যাত্রীই সাবওয়ে দিয়ে নেমে মেট্রোর কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছতেই পারেননি।
মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে অবস্থা এমন হয়, যে মেট্রোর অফিসারদের বিভিন্ন স্টেশনে দায়িত্ব নিতে হয়। পার্ক স্ট্রিটে উচ্চপদস্থ কর্তাদেরও ‘লাইভ কন্ট্রোলে’ বসতে হয়।’’ সব মিলিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠে যায় মেট্রোতে। দুপুরের পরে মেট্রোতে আচমকাই বিরাট সংখ্যার মানুষের ভিড় আছড়ে পড়ায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ বারবার মাইকে ঘোষণা করে যাত্রীদের সহযোগিতা চাওয়া হয়।