পথ আটকে তিন প্রকল্প, গতির বদলে দুর্গতিই প্রাপ্তি শহরের

কলকাতা শহরে তিন-তিনটি বড় উড়ালপুলের কাজ শুরু হয়েছিল ছ’-সাত বছর আগে। বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল, পার্ক সার্কাস-পরমা আইল্যান্ড উড়ালপুল এবং পদ্মপুকুর-কামালগাজি উড়ালপুল তিনটির জন্য মোট খরচ ধরা হয়েছে ৪২৫ কোটি টাকা। পেরিয়ে গিয়েছে এতগুলো বছর। এখনও মাঝ পর্যায়ে পৌঁছয়নি কাজ। কোথায় এবং কেন আটকে রয়েছে প্রকল্পগুলি?

Advertisement

বিদীপ্তা বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০০
Share:

বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল

প্রকল্প ১: বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল।

Advertisement

দৈর্ঘ্য: ২.২ কিলোমিটার।

মোট বরাদ্দ: ১৫৩.৬০ কোটি টাকা।

Advertisement

কাজ হয়েছে: ৫০ শতাংশ।

শেষ হওয়ার কথা: ২০১৪ সালের জুলাই মাসে।

প্রকল্পের হাল: খুব ধীর গতিতে এগোচ্ছে কাজ।

বাধা যেখানে: গিরিশ পার্ক থেকে বিবেকানন্দ রোড, কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিটের উপর দিয়ে হাওড়া সেতু পর্যন্ত যাওয়ার কথা এই উড়ালপুলের। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয়েছে রাস্তার দু’ধারে পোস্তা বাজার থাকায়। নিমতলা ঘাটের কাছেও কাঠ ব্যবসায়ীরা সেতুর কাজ নিয়ে আপত্তি করেছেন। রাস্তা আটকানোর জন্য পুলিশও অনুমতি দেয়নি। জমি-জট রয়েছে হাওড়া সেতুর কাছেও। উড়ালপুল যেটুকু তৈরি হয়েছিল, দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। ফলে বরাদ্দ আরও বাড়বে।

পুর ও নগরোন্নয়ন সচিব দেবাশিস সেন বলেন, “২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরেই এই সেতু তৈরির কাজ শেষ হবে।”

প্রকল্প ২: পদ্মপুকুর-কামালগাজি উড়ালপুল।

দৈর্ঘ্য: ১ কিলোমিটার।

মোট বরাদ্দ: ৫৩.১০ কোটি টাকা।

কাজ হয়েছে: ৬৫ শতাংশ।

শেষ হওয়ার কথা: ২০১৪ সালে।

প্রকল্পের হাল: কাজ ধীরে চলছে।

পদ্মপুকুর-কামালগাজি উড়ালপুল

বাধা যেখানে: ই এম বাইপাসের সঙ্গে বারুইপুর রোডকে যুক্ত করার কথা এই উড়ালপুলের। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে শুরুতেই মামলা হয়। পরে ২০১১ সালে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে কাজ শুরু হলেও রাজ্য সরকার এবং ‘জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আর্বান রিনিউয়াল মিশন’ (জেএনএনইউআরএম) কর্তৃপক্ষের মধ্যে টানাপোড়েনে অর্থের জোগান ঠিকমতো না আসায় কাজ ধীরে চলছে।

পুর ও নগরোন্নয়ন সচিব দেবাশিস সেন দাবি করেন, “কাজ পুরোদমেই চলছে।”

প্রকল্প ৩: পার্ক সার্কাস-পরমা আইল্যান্ড উড়ালপুল।

দৈর্ঘ্য: ৪.৫ কিলোমিটার।

মোট বরাদ্দ: ২৬০ কোটি টাকা।

কাজ হয়েছে: ৬০ শতাংশ।

শেষ হওয়ার কথা ছিল: ২০১২ সালে।

প্রকল্পের হাল: থমকে আছে কাজ।

পার্ক সার্কাস-পরমা আইল্যান্ড উড়ালপুল

বাধা যেখানে: জমি-জটে কাজ বন্ধ হয়ে ঠিকাদার সংস্থা চলে যায়। পরবর্তীকালে ঠিকাদার খুঁজতে নতুন করে টেন্ডার ডাকার কথা হলে পুরনো ঠিকাদার সংস্থা আদালতে মামলা দায়ের করে। তার জেরে কাজ বন্ধ। কাজ শুরু করেছিল একটি বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু ৪ নম্বর সেতুর কাছে মাটির নীচে পাইপলাইন এবং কয়েকটি এলাকায় জমি অধিগ্রহণের সমস্যা শুরু হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পরে ফের কাজ চালু করতে হলে ওই সংস্থা প্রকল্পের মোট বরাদ্দের ১২ শতাংশ টাকা বাড়াতে বলেছিল। রাজ্য সরকার তাতে রাজি না হওয়ায় কাজ থেমে গিয়েছে।

পুর ও নগরোন্নয়ন সচিব দেবাশিস সেন বলেন, “বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন হওয়ায় কাজ আপাতত বন্ধ। ফলে সময়সীমা পিছিয়ে গিয়েছে।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন