ফের ধর্ষণের অভিযোগ, অসঙ্গতিও

একটি গণধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে তদন্তকারীদের মধ্যে। ঘটনাস্থল পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার আব্দুল লতিফ রো। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে গণধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। তরুণীর বয়ানেও বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে। এই অবস্থায় ওই অভিযোগটি নিয়ে কী করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না পুলিশকর্তারা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর বয়ান ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০২:৩১
Share:

একটি গণধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে তদন্তকারীদের মধ্যে। ঘটনাস্থল পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার আব্দুল লতিফ রো। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে গণধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। তরুণীর বয়ানেও বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে। এই অবস্থায় ওই অভিযোগটি নিয়ে কী করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না পুলিশকর্তারা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর বয়ান ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে। আজ, সোমবার আদালতে ওই তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। ওই তরুণীর উপরে কোনও রকম চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। বিষয়টি নিয়ে ডিসি (সাউথ) মুরলীধর শর্মা বলেন, “তদন্ত চলছে।”

Advertisement

পুলিশ জানায়, কড়েয়া এলাকার তিন যুবকের বিরুদ্ধে শনিবার এই অভিযোগ দায়ের করেছেন তপসিয়ার এক তরুণী। অভিযুক্ত শাহিদ হুসেন, শেখ মইনুদ্দিন, জাহিদ হুসেনকে রবিবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা কড়েয়ায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত আমিনুলের ঘনিষ্ঠ। বছর দেড়েক আগে একটি ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদ করে গায়ে আগুন দিয়ে মারা যান আমিনুল। অভিযোগ, কড়েয়া থানার পুলিশের সোর্স ছিলেন ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শাহজাদা বক্স। ওই ঘটনার সময়ে যাঁরা আমিনুলের পক্ষে ছিলেন, তাঁরাই শনিবারের গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত বলে পুলিশের দাবি। এই কারণেই এর মধ্যে অন্য ‘চক্রান্ত’ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, শনিবার রাতেই অভিযোগকারিণীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। তবে সেই রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি বলেও পুলিশের দাবি।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, গত সপ্তাহেই শাহজাদা এবং আমিনুলের ঘনিষ্ঠরা একে অপরের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন কড়েয়া থানায়। পুলিশ তার তদন্ত শুরু করলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

কী ঘটেছিল শনিবার? পুলিশ জানিয়েছে, রাত দশটা নাগাদ এক ব্যক্তিকে নিয়ে এক তরুণী পার্ক স্ট্রিট থানায় যান। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কাজ দেওয়ার অছিলায় জাহিদ তাঁকে পার্ক স্ট্রিটের একটি দোকানেডেকে পাঠান। রাত ৮টা নাগাদ সেখানে পৌঁছলে জাহিদ-সহ তিন জন তাঁকে গণধর্ষণ করে বলে তাঁর অভিযোগ।

তরুণীর এই বয়ানের পরে তদন্তকারীদের সংশয় বাড়ান তরুণীর পরিজনেরাই। পুলিশকে তাঁরা জানান, রাত ৮টা নাগাদ ওই তরুণী বাড়িতেই ছিলেন। পুলিশের আরও দাবি, ওই তরুণীর কাছে থাকা অভিযোগপত্রটি পুরোটাই ইংরেজিতে লেখা। কিন্তু নীচে ওই তরুণী বাংলায় স্বাক্ষর করেছিলেন। এমনকী যে ব্যক্তিকে নিয়ে তিনি থানায় আসেন, সেই ব্যক্তি ওই তরুণীর পরিচিত ছিলেন না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, তাঁদের নামে আগেও কড়েয়া থানায় আরও এক মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সে অভিযোগেও বিস্তর গোলমাল থাকায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।

এ দিন তরুণীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁকে মেটিয়াবুরুজে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে আসা হয়েছে। তবে তাঁর মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে কেন এমন অভিযোগ করেছেন, বারবার তা জিজ্ঞেস করেও উত্তর পাননি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন