বেহালা

ভোট পেতে এ বার অস্ত্র ভাতার স্লিপ

শিয়রে ভোট। তাই, প্রাণপণে নিজের ঢাক নিজে পেটানোর ফন্দি এঁটেছেন কলকাতা পুরসভার ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর। পুরসভার দেয় বিধবা ও বার্ধক্য ভাতার টাকা বিলির দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি। নিজের অফিসে বসে সই করে স্লিপ দিচ্ছেন ভাতা প্রাপকদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০০:০৬
Share:

শিয়রে ভোট। তাই, প্রাণপণে নিজের ঢাক নিজে পেটানোর ফন্দি এঁটেছেন কলকাতা পুরসভার ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর। পুরসভার দেয় বিধবা ও বার্ধক্য ভাতার টাকা বিলির দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি। নিজের অফিসে বসে সই করে স্লিপ দিচ্ছেন ভাতা প্রাপকদের। স্লিপ নিয়ে তাঁরা যাচ্ছেন পাশের অস্থায়ী ছাউনিতে, যেখান থেকে তাঁদের চেক দিচ্ছেন পুরকর্মীরা। দেখেশুনে পুরসভার তাবড় কর্তারা মুখ টিপে হেসে বলছেন, “সামনে ভোট। তাই সরকারের অর্থ দিতে কাউন্সিলর এমন পন্থা নিয়েছেন, যেন নিজের টাকা দিচ্ছেন।”

Advertisement

বেহালার ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লের ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ নতুন নয়। ভোটবাক্স অটুট রাখতে আগে মুখ্যমন্ত্রীর কৃতিত্বও খাটো করতে পিছপা হননি তিনি। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে থেকে পাওয়া ক্লাব-অনুদানের টাকা পোল্লে রীতিমতো অনুষ্ঠান করে ফের বিলি করেছিলেন। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবগুলিকে চেক বিলির পরে পরেই পোল্লের অফিস থেকে ওই ওয়ার্ডের ক্লাবগুলির কাছে ফরমান আসে, ওগুলি ফের জমা দিয়ে যেতে হবে কাউন্সিলরের অফিসে। ক্লাব চেক জমা দিয়ে যাওয়ার পরে ঢাকঢোল পিটিয়ে অনুষ্ঠান করেন পোল্লে। সেখানে ফের চেক বিলি করা হয়। ভাবখানা এমন, যেন দু’লক্ষ টাকার চেক দিচ্ছেন এলাকার কাউন্সিলরই।

একই ভাবে এ বার বিধবা ও বার্ধক্য ভাতার দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়েছেন কাউন্সিলর। পুরসভা থেকে মাসে চারশো টাকা করে বিধবা এবং বার্ধক্য ভাতা দেওয়া হয়। তালিকাভুক্তরা বরো অফিসে গিয়ে তা নিয়ে আসেন এটাই নিয়ম বলে জানান পুরকর্মীরা। এক চেক প্রাপক বলেন, “কাউন্সিলর জানিয়েছেন, তাঁর অফিস থেকে স্লিপ নিয়ে গেলেই চেক মিলবে।” তাঁদের অনেকটা পথ যেতে বেশ কিছু টাকা খরচ হয় বলে সম্প্রতি ওয়ার্ড এলাকা থেকেই চেক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তৃণমূলের কর্মীরা।

Advertisement

অভিযোগ, নয়া এই ব্যবস্থাকে প্রচারের হাতিয়ার করেছেন ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। পুরসভা যেখান থেকে ভাতা দিচ্ছে, তার পাশেই ওই ওয়ার্ডে শাসক দলের অফিস। তালিকাভুক্তদের আসতে হচ্ছে ওই অফিসে। সেখানে তালিকা দেখে স্লিপ লিখে দেওয়া হচ্ছে। স্লিপ দেখিয়ে পুরসভার অফিস থেকে ভাতা মিলছে। এক পুরকর্তার কথায়, “স্লিপটা দেওয়া হচ্ছে এটা বোঝাতে, কাউন্সিলরই নিজেই ভাতা দিচ্ছেন।” মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য ওই ঘটনাকে কোনও গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “প্রাপকেরা চেক পেলেই হলো।”

সুদীপবাবুর অবশ্য দাবি, “পুরসভার টাকা আমরা দিতে পারি না। অফিসারেরাই দিচ্ছেন।” কিন্তু আপনি তো স্লিপ দিচ্ছেন? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি সুদীপ পোল্লে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন