এই ছাতায় চলবে তো? পার্ক সার্কাসে ট্রাফিক-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ কমিশনার। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রীষ্মকালে রাস্তায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের কাজের সময় দু’ঘণ্টা করে কমিয়ে দেওয়ার রীতি রয়েছে কলকাতা পুলিশের। ফি-বছর এই রীতি পালন করা হয় এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে। কিন্তু এ বার তীব্র গরমের জন্য তা এপ্রিলের শুরু থেকেই কার্যকর করল কলকাতা পুলিশ।
এই তীব্র গরমে শহরের রাস্তায় কী ভাবে কাজ করছেন ট্রাফিক পুলিশকর্মীরা? সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ তা দেখতে বার হন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। পরমা আইল্যান্ড, পার্ক সার্কাস মোড়, গড়িয়াহাট মোড়, যাদবপুর থানা, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড মোড়, নিউ আলিপুর, তারাতলা ঘুরে লালাবাজারে পৌঁছন সাড়ে এগারোটা নাগাদ।
পরে আবার দুপুর তিনটে নাগাদ লালবাজার থেকে বার হয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ও মহাত্মা গাঁধী রোডের মোড়, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়, মানিকতলা, মৌলালি হয়ে এসপ্ল্যানেডের ডোরিনা ক্রসিং ও চৌরঙ্গি মোড়ে পৌঁছন বিকেল চারটে নাগাদ। কমিশনারের সঙ্গে এ দিন শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরেন যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) সুপ্রতিম সরকার এবং ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ আদকও।
সকাল থেকেই শহরের নানা জায়গা ঘুরে কমিশনার নিজেই তদারকি করে দেখেন ট্রাফিক পুলিশদের জন্য কিয়স্কগুলিতে পর্যাপ্ত জল, ওআরএস, ছাতা রয়েছে কি না। প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ডে পথচারীদের জন্যও পর্যাপ্ত পরিমাণ জল, ওআরএস রাখার নির্দেশ দেন তিনি। এ ছাড়া, বিভিন্ন জায়গায় ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের ডেকে ডাবও খাওয়ান সুরজিৎবাবু। গরমের মধ্যে প্রত্যেককে শরীরের যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন। প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ডে ছাতা, সানগ্লাস, নেককুলার, ভিজে তোয়ালে রাখার কথাও বলেন। শুধু ট্রাফিক-কর্মীরাই নন, এ দিন সাধারণ মানুষ এবং স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গেও কথা বলেন পুলিশ কমিশনার। নিউ আলিপুর এবং তারাতলা মোড়ে পড়ুয়াদেরও ডাব খাওয়ান তিনি। কথা বলেন অভিভাবকদের সঙ্গেও। পড়ুয়াদের নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে কোনও অসুবিধায় পড়লে তাঁদের ট্রাফিক পুলিশের সাহায্য নিতে বলেন।
ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ আদক বলেন, “শহরের আঠাশটি ট্রাফিক গার্ডে আমরা আগামী এক মাসের মতো পর্যাপ্ত ওআরএস রেখেছি। সব জায়গায় জলের ব্যবস্থাও রাখার কথা বলা হয়েছে।” লালবাজার সূত্রে খবর, যাদবপুর, শিয়ালদহ-সহ সমস্ত ট্রাফিক গার্ডেই ছাতা ও অন্যান্য জিনিস প্রয়োজন অনুযায়ী পাঠানো হয়েছে এবং এ দিনই তা ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ দিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ লালবাজারে ফিরে গিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, “কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের মনোবল বাড়াতেই আজ রাস্তায় নেমেছিলাম। গরমের মধ্যে ফের এক দিন পথে নেমে ওঁদের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে আছে।”