এ ভাবেই থাকে পার্কিং। ছবি: অরুণ লোধ।
পর পর সাজানো বিভিন্ন মডেলের গাড়ি। গায়ের স্টিকারে লেখা ‘ফর সেল’। সঙ্গে দেওয়া যোগাযোগের নম্বরও। চলার পথে অনেকেই দাঁড়িয়ে পড়ে দেখেন। গাড়িগুলির উপরে নজরদারির জন্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন জনা কয়েক ব্যক্তি। কারও উৎসাহ দেখলে এগিয়ে আসেন সাহায্যের জন্য। কোনও শোরুম নয়, এ ছবি কলকাতা পুরসভার ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত জেমস লঙ সরণির একাংশের।
অভিযোগ, ঠাকুরপুকুর থেকে তারাতলার দিকে যেতে জেমস লঙ সরণির উপরে কে এফ আর (কলকাতা-ফলতা রেলওয়ে) মাঠের থেকে খানিকটা দূরে ২৯ পল্লি সংলগ্ন অংশে এ ভাবেই দাঁড় করানো থাকে গাড়িগুলি। প্রায় এক বছর আগে পিডব্লিউডি নতুন করে তৈরি করেছে জেমস লঙ সরণি। দ্রুত গতির এই রাস্তায় বাম্পার নেই। ফুটপাথের জবরদখল যাতে মাথা ব্যথার কারণ না হয়ে ওঠে তাই সঙ্কীর্ণ করা হয়েছে ফুটপাথ। আধুনিক এই রাস্তার উপরে কী ভাবে দিনের পর দিন ব্যবসার জন্য গাড়ি দাঁড় করানো থাকে? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়েরা। বাসিন্দা স্বপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অনেক বার এই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। তবু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হল না। অথচ নতুন এই রাস্তায় গাড়ির গতিবেগ বৃদ্ধির কারণে এবং কিছু মানুষের অসচেতনায় গত এক বছরে ছ’-সাতটি দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এর পরেও রাস্তার এতটা জায়গা দখল করে রাস্তা সরু করা হচ্ছে।”
অভিযোগের কথা মানছেন স্থানীয় পুর প্রতিনিধি অশোকা মণ্ডল।
তাঁরও দাবি, “বার বার এই নিয়ে অনেক জায়গায় অভিযোগ করা হয়েছে। লাভ হয়নি।” তাঁর অভিযোগের আঙুল সরাসরি ট্রাফিক বিভাগের উপরে। তিনি জানাচ্ছেন, অভিযোগ জানানোর পরে পুরসভার পার্কিং দফতর অভিযান চালিয়ে
দু’বার গাড়ি রাখা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিছু দিন পর থেকে ফের শুরু হয়েছে ব্যবসা। অথচ ট্রাফিক বিভাগের ওসিকে এই নিয়ে অনেক বলেও ট্রাফিকের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। যদিও কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক কর্তা বলেন, “এ ক্ষেত্রে পুরসভাকেই উদ্যোগী হতে হবে। আমরা প্রয়োজন মতো সহায়তা করব।”
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্কিং) দেবাশিস কুমার যদিও বলেন, “জেমস লঙ সরণির ওই অংশে পুরসভার তরফ থেকে পার্কিং-এর অনুমোদন নেই। ওই রাস্তা পিডব্লিউডি-র। তবে পার্কিং-এর বিষয়টি পুরসভা ও ট্রাফিক দেখে। পার্কিংয়ের অনুমোদন যদি থাকত তা হলেও পাকিং লটে এ ভাবে দিনের পর দিন ব্যবসার জন্য গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা যায় না। কারণ, পার্কি-এ গাড়ি আসবে। নির্দিষ্ট সময় পরে চলে যাবে এটাই নিয়ম। সুতরাং পুরো বিষয়টি অবৈধ। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে চেষ্টা করছি দ্রুত সমস্যা মেটাতে।”