এ ভাবেই নোংরা হচ্ছে চত্বর। ছবি:দীপঙ্কর মজুমদার।
ফিরে এল সেই চেনা ছবি। হাওড়া স্টেশনের বাইরের সাবওয়ের প্রবেশপথটি ধীরে ধীরে ফের উন্মুক্ত শৌচালয় হয়ে উঠেছে। অথচ তা বন্ধ করতে রেলের কর্মকর্তাদের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ জানা নিত্যযাত্রীদের একাংশ।
এই বছরের প্রথম দিকেও এলাকাটির প্রায় একই অবস্থা ছিল। এই সংবাদপত্রে গত মার্চে তা নিয়ে খবর প্রকাশের পরে নড়েচড়ে বসে হাওড়া পুরসভা, পূর্ব রেল এবং হাওড়া সিটি পুলিশ। তখন সাবওয়ের প্রবেশপথে প্রস্রাব করা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ওই পরিস্থিতি বেশি দিন বহাল থাকেনি। ফের শুরু হয়েছে দৃশ্যদূষণের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ।
নতুন ভাবে তৈরি হয়েছে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ কিয়স্ক। হাওড়া স্টেশনের সর্বত্র কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছ ভারত মিশনের পোস্টারে ভরেও গিয়েছে। অথচ সেই স্টেশনের সাবওয়ের এই হাল। কলকাতা থেকে হাওড়া ব্রিজ পার হয়ে আসা যাত্রীদের স্টেশনের মূল ফটকে ঢুকতে হলে ওই সাবওয়ে দিয়ে যেতে হয়। আর সেখানেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেন মানুষ। এ হেন দৃশ্যে বিরক্ত নিত্যযাত্রীরা।
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, কয়েক বছর আগে সাবওয়ে ঢোকার এই ফুটপাথটি হকারদের দখলে থাকায় হাঁটাই দায় ছিল। পুলিশ ও রেল অবশ্য তা সরিয়ে দেয়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর। সাঁকরাইলের বাসিন্দা কমল সরকার বলেন, “হকাররা থাকলে যেতে অসুবিধা হত। এখন তো যাওয়াই যাচ্ছে না। ভয়ঙ্কর নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর জায়গা দিয়ে প্রতি দিনই যেতে হয়।” আর এক মহিলা যাত্রী বললেন, “নাকে রুমাল দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে কোনওক্রমে যাতায়াত করি। খুব অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। কেন্দ্রীয় সরকার স্বচ্ছ ভারত মিশনের ডাক দিয়েছেন। অথচ হাওড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন চত্বরে প্রস্রাব করলে জরিমানার ব্যবস্থা থাকছে না কেন?”
তবে কাছাকাছি কোনও শৌচালয় না থাকাটাও সমস্যা বলে জানান কিছু নিত্যযাত্রী। যদিও যাত্রীদের একাংশের মতে শৌচালয় থাকলে যে এমনটা হত না তা নয়। কিছু সংখ্যক মানুষের সচেতনতার অভাবে এমন পরিস্থিতি হয়। হাওড়া পুরসভার ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারী বলেন, “আমি ওখানে লোক পাঠিয়ে বন্ধ করার ব্যবস্থা করছি।”
হাওড়া পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নিশাদ পারভেজ (সদর) বলেন, “আগেও পদক্ষেপ করা হয়েছিল। আবারও প্রস্রাব বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরিমানা করা যায় কি না ভেবে দেখব।” পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে বন্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”