অবমাননা মামলায় শাস্তি ভূমি-কর্তার

নারায়ণগড়ের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে চার দিন জেলে থাকার নির্দেশ দিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

নিম্ন আদালত নির্দেশ দিয়েছে। জমি ট্রাইবুনাল তা বিবেচনা করতে বলে। নির্দেশ রূপায়ণ করতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্টও। তাতেও কাজ না-হওয়ায় বৃহস্পতিবার আদালত অবমাননার মামলায় নারায়ণগড়ের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে চার দিন জেলে থাকার নির্দেশ দিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

নির্দেশ পেয়ে ওই আধিকারিককে এ দিন কয়েক ঘণ্টা হাইকোর্টে শেরিফের লক-আপে থাকতে হয়। দুপুরে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানান, রাজ্য নির্দেশ মানবে। তাই ডিভিশন বেঞ্চ তাদের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করুক। এজি-র আর্জি মেনে প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, তাঁদের নির্দেশের উপরে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ থাকছে ঠিকই। তবে ওই দিন ডিভিশন বেঞ্চে জানাতে হবে, নির্দেশ রূপায়ণ করা হয়েছে কি না। যদি না-হয়, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ আনতে হবে।

ঘটনাটি কী? আইনজীবী রবিলাল মৈত্র ও অর্ণবকুমার নিয়োগী জানান, তাঁদের মক্কেল, পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার বাসিন্দা বিষ্ণুপ্রিয়া দে-র সাড়ে এগারো শতক জমি রয়েছে নারায়ণগড় ব্লকের বিভিন্ন মৌজায়, বিভিন্ন দাগ ও খতিয়ান নম্বরে। সত্তরের দশকে সেই সব জমির কিছু নথি নিজের নামে করতে চেয়ে তিনি নিম্ন আদালতে আবেদন করেন। নিম্ন আদালত আবেদন মঞ্জুর করতে বলেছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জমি ট্রাইবুনালে যায় রাজ্য।

Advertisement

ট্রাইবুনাল রাজ্য সরকারকে সেই আবেদন বিবেচনা করতে বলে। রাজ্য বিবেচনা না-করায় বিষ্ণুপ্রিয়া হাইকোর্টে যান। হাইকোর্ট ২০১৩ সালে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে। তাতেও লাভ না-হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা হয়। ১৬ নভেম্বর নারায়ণগড়ের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সনৎকুমার বিশ্বাস আদালতে হাজির হলে তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়, ২০১৩ সালের নির্দেশ কার্যকর করে ২২ নভেম্বর আদালতকে জানাতে হবে। এ দিন সনৎবাবু হলফনামা দিয়ে জানান, নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। কিন্তু মহিলার কৌঁসুলি অভিযোগ করেন, এখনও বেশ কয়েকটি জমির নথি হাতে আসেনি। ডিভিশন বেঞ্চ তখন ওই আধিকারিককে জেলে পাঠায়।

এজি জানান, কিছু জমির নথি এখনও আবেদনকারীর নামে হয়নি। সেগুলির পাট্টা বাতিল না-করলে নথি তৈরি হবে না। কিন্তু পাট্টা বাতিলের ক্ষমতা সনৎবাবুর হাতে নেই। প্রধান বিচারপতি করগুপ্ত তা শুনে এজি-কে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি যে-কারণ দেখাচ্ছেন, তা হলফনামায় বলা হয়নি কেন? এত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কেনই বা আদালতকে জানানো হল যে, নির্দেশ পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে? সেই জন্য তো জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন