প্রতীকী চিত্র
জমি দখলে নাম জড়িয়েছে তৃণমূল নেতা হিম্মত সিংহ চৌহানের। সেই মামলায় দীর্ঘ দিন ধরে জেল খেটে আপাতত জামিনে রয়েছেন তিনি। এছাড়াও, কখনও নকশালবাড়ির সুনীল ঘোষ, কখনও চম্পাসারির শ্যাম যাদব- একাধিকবার জমি সংক্রাম্ত নানা অভিযোগে বারবার নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের নানা নেতার। জমি দখল কাণ্ডে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বারবার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের কোনও নেতা-কর্মী জমি দখলে জড়িত থাকলে কোনও রেয়াত করা হবে না বলেও বার্তা দিয়েছেন তিনি। তারপরেও জমিকাণ্ডে দলের একাধিক নেতার নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল।
এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে দলের অন্দরেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের কথা বলে দলের নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, অবিলম্বে অভিযুক্তদের দলের বাইরে পাঠিয়ে আইনের রাস্তা দেখানো প্রয়োজন। নইলে লোকসভা ভোটের প্রচারে জমি মামলার প্রসঙ্গ উঠে এলে দলের ভাবমূর্তিই খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
দলের জেলার নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, নকশালবাড়ি থেকে চম্পাসারি, মাটিগাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় জমি ঘিরে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠেছে। কোথাও জমিকে ঘিরে দু’পক্ষের গোলমালে জড়িয়ে যাচ্ছেন নেতারা। আবার, কোথাও সরাসরি অভিযুক্ত হয়েছেন জমি দখলে। কয়েকটি ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট তৈরি করে জমির ব্যবসা চলছে বলেও অভিযোগ এসেছে। শিলিগুড়ি মহকুমা ছাড়াও ইস্টার্ন বাইপাস, আশিঘর, ফুলবাড়ি এলাকাতেও একই পরিস্থিতি রয়েছে বলে অভিযোগ।
দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব দুই সপ্তাহ আগেই পার্টি অফিসে ডেকে চম্পাসারির নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দেন। তারপরেও পোকাইজোত এলাকায় একটি অভিযোগ সামনে এসেছে। নকশালবাড়িতে সুনীল ঘোষের মত ডাকসাইটে নেতার বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। তার জেরে তাঁকে সতর্ক করে দলের সমস্ত দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। দলের জেলা নেতাদের মধ্যে দীপক শীল, দিলীপ বর্মণদের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কোনও অনৈতিক কাজ চলবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তারপরেও কিছু নেতা সর্তক হননি। জেলা নেতৃত্বের অবিলম্বে এঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’’
জেলার কোর কমিটির সদস্য কৃষ্ণ পালের মতে, ‘‘প্রথমে সতর্ক করা হচ্ছে। নইলে তো জেলা নেতৃত্ব নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।’’ কড়া ব্যবস্থার হঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি গৌতম দেবও। তিনি বলেছেন, ‘‘সব কিছুই নজরে রাখা হচ্ছে। আইন আইনের পথে চলবে।’’ প্রাক্তন নকশালবাড়ি ব্লক সভাপতি সুনীলবাবু অবশ্য সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি। ঘনিষ্ট মহলে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তেমনিই, যুব নেতা শ্যাম যাদবের দাবি, ‘‘কাউকে মারিনি, হুমকি দিইনি।’’