ধর্মঘটে হুঁশিয়ারি, ডাক বাম মিছিলে

নতুন আইন এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিল ছিল বামেদের। পুলিশের আপত্তি অগ্রাহ্য করে মৌলালির মোড় ঘুরে এজেসি রোড ধরেই মল্লিকবাজার হয়ে এগিয়েছে মিছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৯
Share:

মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিল বামেদের।—নিজস্ব চিত্র।

রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছেই। নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে সেই প্রতিবাদের পথ ধরেই এ বার বন্‌ধ পালন করে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের সরকারকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার ডাক দিল বামেরা। কলকাতায় মিছিল করে তারাও দাবি তুলল নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করে নেওয়ার।

Advertisement

নতুন আইন এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিল ছিল বামেদের। পুলিশের আপত্তি অগ্রাহ্য করে মৌলালির মোড় ঘুরে এজেসি রোড ধরেই মল্লিকবাজার হয়ে এগিয়েছে মিছিল। পথে নানা প্রান্ত থেকেই মিছিলে যোগ দিয়েছেন মানুষ। পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ে পৌঁছে জয়প্রকাশ নারায়ণের মূর্তির কাছে যখন ম্যাটাডোর-মঞ্চে বক্তৃতা করছেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, পার্থ ঘোষেরা, মিছিলের লেজ তখনও রিপন স্ট্রিটের মোড়ে। মোদী সরকারকে পিছু হঠতে বাধ্য না করা পর্যন্ত রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ চলবে বলে জানিয়েছেন বাম নেতারা।

একই দিনে পুলিশের নিষেধ উপেক্ষা করে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে থেকে ‘দেশ বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও’-এর ডাক দিয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের রামমন্দির পর্যন্ত মিছিল করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। ছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য, অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকার, মায়া ঘোষ, শাদাব খান-সহ প্রদেশ ও যুব কংগ্রেস নেতারা। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি যে ভাবে তৈরি হয়েছে, তাতে আমাদের আশঙ্কা দ্বিজাতি-তত্ত্বের ভিত্তিতে আবার দেশ ভাগ না হয়ে যায়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘নিরপেক্ষ’ সংস্থার পর্যবেক্ষণে গণভোটের দাবি তুললেন মমতা

বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন আগামী ৮ জানুয়ারি দেশ জু়ড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রের শ্রমিক-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে। বিজেপি ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন সেই ধর্মঘটে নেই। কৃষক সংগঠনগুলি ওই দিনই গ্রামীণ ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছে। নাগরিকত্ব বিল এবং এনআরসি-র প্রতিবাদকে ওই ধর্মঘটের বিষয়ের মধ্যে আনা হয়েছে। মিছিল শেষে এ দিন বিমানবাবু, সূর্যবাবুরা বলেছেন, ‘‘ধর্মঘটে সারা দেশ স্তব্ধ করে এই স্বৈরাচারী সরকারকে জবাব দিতে হবে। সে দিন যদি তৃণমূল বাধা দেয়, তবে বোঝা যাবে কে কী চায়!’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘দেশভাগের সময়ে মহম্মদ আলি জিন্নার ডাকে সাড়া দিয়ে এ দেশের সব মুসলিম পাকিস্তানে চলে যাননি। বাপ-দাদার কবর যেখানে আছে, সেখানেই থেকে গিয়ে খেটে খাচ্ছেন। জিন্নার কথা যাঁরা ফিরিয়েছেন, তাঁরা অমিত শাহের কথায় পাকিস্তানে চলে যাবেন?’’

কলকাতার মতো শিলিগুড়িতেও বাঘাযতীন পার্ক থেকে মহানন্দা মোড় পর্যন্ত বড় মিছিল করেছে বাম দলগুলি। কিছু জেলায় যেমন বামেরা নিজেরাই মিছিল করেছে, কিছু জায়গায় আবার কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথ ভাবে পথে দেখা গিয়েছে বামেদের। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের মতে, ‘‘আশা করছি, শীঘ্রই কংগ্রেস-বামফ্রন্টের বিশাল মিছিল আমরা কলকাতায় করতে পারব।’’ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীরাও বলেছেন, এ দিন কলকাতার মিছিল ছিল ১৭ বাম দলের কর্মসূচি। কংগ্রেসের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির প্রশ্ন নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন