আগের দিন ধরতে গেলে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রবিবার সকালে ছাতিম গাছের সেই মগডালেই চিতাবাঘের মতো কিছু আবার এসে বসেছে দেখে হাঁক পেড়ে লোক জড়ো করে ফেলেছিলেন জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির হেলাপাকড়ি গ্রামের কয়েকজন।
চারপাশ ঘিরে ফেলে চিৎকার করে, ঢিল ছুড়ে শেষ পর্যন্ত সেটিকে নামিয়েও আনা হয়। তারপরেই শুরু হয় লাঠি দিয়ে বেদম মার। মার খেয়ে নেতিয়ে পড়লে তার পা দড়ি দিয়ে কষে বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছিল। তারপরে অবশ্য বনদফতরে খবর দেওয়া হয়। বনকর্মীরা যখন তাকে উদ্ধার করে, কোমর ও পিছনের পা সে আর তুলতেই পারছে না।
বন দফতর জানিয়েছে, প্রাণীটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী লেপার্ড ক্যাট। উত্তরবঙ্গের বনপাল (বন্যপ্রাণ) সুমিতা ঘটক জানিয়েছেন, অনেকটা চিতাবাঘের মতো দেখতে হলেও, এই প্রাণী আকারে একটু ছোট। গভীর জঙ্গলে থাকে। পারতপক্ষে লোকালয়ে আসতে চায় না। চিতাবাঘের চেয়ে অনেক বেশি ভীতু। উত্তরবঙ্গে খুব বেশি দেখাও যায় না। এলাকার মানুষের বক্তব্য, কয়েক দিন ধরেই ওই প্রাণীটি লোকালয়ে ঢুকে হাঁস মুরগি খেয়ে যাচ্ছিল। তাই এ দিন তাঁরা আর ধৈর্য ধরতে পারেননি।
এ বছরই এই নিয়ে বেশ কয়েকবার লোকালয়ে বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ল। হাতির হানা তো হয়েইছে, চিতাবাঘও চলে এসেছে লোকালয়ে। চিতাবাঘের সামনে পড়ে বেশ কয়েকজন জখমও হয়েছেন। তবে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় বন্যপ্রাণীদের উপরে পাল্টা হানাও হয়েছে বেশ কয়েকবার।
গত বছর উত্তরবঙ্গে অন্তত দু’টি চিতাবাঘকে পিটিয়ে ও বিষ মেশানো মাংস খাইয়ে মেরে ফেলা হয়। পশুপ্রেমীদের অবশ্য জানিয়েছেন, গভীর অরণ্যে খাবার না পেয়েই বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে চলে আসে। কখনও সন্তান প্রসব করতেও
আসে। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন তাঁরা।