দুর্ঘটনার পরে। নিজস্ব চিত্র
বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল হাওড়া-খড়্গপুর শাখার দুটি লোকাল ট্রেন। তেমন কেউ হতাহত না হলেও সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি। বালিচক লোকালের ধাক্কায় দাঁড়িয়ে থাকা মেদিনীপুর লোকালের গার্ডের কামরাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার পিছনের একটি কামরার কয়েকটি চেয়ারও দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে।
রবিবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পাঁশকুড়া ও ক্ষীরাই স্টেশনের মাঝে একটি বাঁকের মুখে। দুটি লোকালই ছিল হাওড়ামুখী। জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া স্টেশনের কাছে একটি পয়েন্ট খারাপ হয়ে যাওয়ায় স্টেশনের ‘হোম সিগন্যাল’ লাল হয়ে গিয়েছিল। তা দেখে দাঁড়িয়ে পড়ে হাওড়াগামী একটি মালগাড়ি। তার পিছন পিছন একই লাইনে আসছিল মেদিনীপুর লোকাল। মালগাড়িকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিছুটা তফাতে দাঁড়িয়ে পড়ে মেদিনীপুর লোকালও।
পর পর দুটি ট্রেন আটকে থাকায় নিয়ম মতো ‘হোম সিগন্যালে’র আগের সিগন্যালটিও লাল হয়ে যায়। তাই পিছনে আসা বালিচক লোকালের চালকও লাল সিগন্যাল দেখে নিয়ম মেনে এক মিনিট দাঁড়িয়ে গতি কমিয়ে (ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার) ফের রওনা দেন। কিন্তু কিছুটা এগোতেই বাঁকের মুখে আচমকা সামনে পড়ে যায় মেদিনীপুর লোকাল। তখন আর ব্রেক কষার সুযোগ পাননি চালক। সোজা গিয়ে বালিচক লোকাল ধাক্কা মারে মেদিনীপুর লোকালের গার্ডের কেবিনের বাফারে।
ভয়ে হুড়োহুড়ি শুরু করে দেন যাত্রীরা। মেদিনীপুর লোকালের যাত্রী প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌরভ চক্রবর্তীর প্রশ্ন, “প্ল্যাটফর্মের বাইরে একটি লোকাল ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রেখে একই লাইনে আরও একটি লোকালকে পাঠানো হল কেন? এ তো ভয়ঙ্কর!’’ যাত্রীদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পরে একঘন্টা ট্রেনেই আটকে থাকতে হয়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই খড়্গপুর থেকে রওনা দেন রেল আধিকারিকেরা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানান, ‘‘বালিচক লোকালের চালককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
রেল কর্তাদের একাংশ আবার মনে করছেন, পয়েন্ট খারাপ হওয়ার খবর জানিয়ে বালিচক লোকালের চালককে আগাম সর্তক করা গেলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।