—ফাইল চিত্র।
তিন মাসের বেশি রোজগার নেই। নিজেদের পেটের ভাত ভাল ভাবে জুটছে না। কিন্তু পোষা ঘোড়াগুলোকে দানাপানি তো দিতেই হবে! তাতেই পকেট একেবারে ফাঁকা। বন্ধ ওঠার পরে আশায় বুক বেঁধে ফের ঘোড়া নিয়ে ম্যালে আসছেন গ্যাংসো ভুটিয়া, সন্দীপ থাপারা। যদি ফিরে আসেন পর্যটকেরা!
রবিবারে কিছু পর্যটকের দেখাও মিলেছে ম্যাল-চৌরাস্তায়। তবে সে নিতান্তই হাতে গোনা। কিন্তু তাতেই খুশি সন্দীপ থাপারা বলছেন, ‘‘কালীপুজোর আগে ভিড় বাড়লে তবেই রক্ষে।’’ শুধু সন্দীপই নন, এটা এখন পাহাড়ের ব্যবসায়ী, হোটেলমালিক, ভ্রমণ সংস্থাগুলোর কর্তাদের সকলেরই মনে কথা।
বন্ধ উঠেছে সপ্তমীর দিন। তার পর থেকে মোটে ৩ দিন সময় মিলেছে। তাই শনিবার দশেরায় রাবণ পোড়ানোর আয়োজন করা যায়নি। আয়োজকদের অন্যতম সতীশ শর্মা বলেন, ‘‘এটুকু সময়ের মধ্যে সব ব্যবস্থা করব কী করে!’’ একই ভাবে রবিবার মহরমেও দোকানগুলোও আলোয় সাজেনি।
এ সব চোখে পড়ছে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদেরও। দার্জিলিঙের দায়িত্বে থাকা আইপিএস জাভেদ শামিম জানান, তাঁরাও চান পর্যটকরা আসুন। পুলিশ প্রশাসন সঙ্গে রয়েছে।
ম্যালের কাছে হোটেল সমীর সিঙ্ঘলের। তিনি ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তাও। জানান, তাঁর হোটেলে কিছু পর্যটক এসেছেন। সমিতির সম্পাদক বিজয় খান্নার হোটেলে কর্মীরাই এখনও ফেরেননি। তাঁর কথায়, ‘‘দু’চার দিনের মধ্যেই ওদের আসার কথা।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ভ্রমণ সংস্থার অনেকেযোগাযোগ করছেন। দেখা যাক কী হয়।’’
ম্যালে অক্সফোর্ডের দোকানের প্রবীণ কর্মী ইন্দ্রমান দেওয়ান। ১৯৮৬ থেকে বন্ধ দেখছেন। বলেন, ‘‘বন্ধ ওঠার পরে লোকজন তো আসতে শুরু করেছে। দেখা যাক।’’ মহাকাল মন্দিরের পুরোহিত মতি শর্মার কথায়, ‘‘ফুলপাতিতে সামান্য কিছু লোক এসেছেন। অন্য বছর তো লোকের দাঁড়াবার জায়গা হয় না।’’ তবে সকলেরই আশা, ছবিটা বদলাবে।
টয়ট্রেনও চালানো যাচ্ছে না এখন। রেল কর্তৃপক্ষ জানান, টানা বন্ধে টয়ট্রেনের লাইনে কোথাও ঝোপঝাড় হয়ে গিয়েছে, কোথাও ধসে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন। মেরামতির কাজ চলছে। কিছু সময় লাগবে। ‘ট্র্যাক ফিট সার্টিফিকেট’ মিললে তার পরেই টয়ট্রেনে ‘জয় রাইড’-এর মতো সফর শুরু করা সম্ভব বলে জানান স্টেশন ম্যানেজার সুমন প্রধান।
(সহ প্রতিবেদন: সৌমিত্র কুণ্ডু)