ছিটমহল

বিনামূল্যে জমি দিতে আগ্রহ

কেউ বলছেন দুই বিঘা জমি দেবেন। কেউ বলছেন পাঁচ বিঘা জমি তুলে দেবেন প্রশাসনের হাতে। রবিবার বাংলাদেশ থেকে আসা ছিটমহলের বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবিরের জন্য জমি দেখতে বেরিয়ে এমনই আশ্বাস পেলেন দিনহাটার মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ। প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারি হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশের ভারতীয় ছিটমহলগুলি থেকে হাজারখানেক লোক এপারে আসবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৫ ০২:৩২
Share:

কেউ বলছেন দুই বিঘা জমি দেবেন। কেউ বলছেন পাঁচ বিঘা জমি তুলে দেবেন প্রশাসনের হাতে। রবিবার বাংলাদেশ থেকে আসা ছিটমহলের বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবিরের জন্য জমি দেখতে বেরিয়ে এমনই আশ্বাস পেলেন দিনহাটার মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ। প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারি হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশের ভারতীয় ছিটমহলগুলি থেকে হাজারখানেক লোক এপারে আসবেন। দিনহাটার সাহেবগঞ্জ এবং মেখলিগঞ্জের চ্যাংরাবান্ধা দিয়েই তাঁরা আসবেন। অন্তত পাঁচটি ত্রাণ শিবির করে ওই বাসিন্দাদের দুই বছর রাখার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের জন্য স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি করার কথা। ছিটমহলগুলিতে যাতে কোনওরকম উত্তেজনা না ছড়ায়, সে জন্য একাধিক পুলিশ ক্যাম্প বসানোর আশ্বাসও দিয়েছে প্রশাসন। মশালডাঙা ছিটমহলে দুষ্কৃতী হামলার পরে প্রশাসন গণ্ডগোল রুখতে তৎপর হয়ে উঠেছে। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির পক্ষ থেকেও ছিটমহলের সাত জায়গায় পুলিশ ক্যাম্প বসানোর দাবি করা হয়েছে। তাঁরা লিখিত ভাবে কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদবের কাছে ওই দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement

কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “ত্রাণ শিবিরের জন্য জমি দেখা হচ্ছে। উন্নয়নের পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। কোথাও যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখছি।” দিনহাটার মহকুমাশাসক বলেন, “অনেকেই জমি দিতে চেয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ত্রাণ শিবিরের জমি সংগ্রহ নিয়ে কোনও অসুবিধে হবে না বলেই আমরা আশাবাদী।” ছিটমহলের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জমি নিয়ে সমস্যার কথা দীর্ঘদিন ধরেই চর্চিত। বিনিময় কমিটির পক্ষ থেকে প্রশাসনকে প্রায় ১০০ একর জমি দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। সে সংক্রান্ত কাগজপত্র তাঁরা সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। গত ৬ জুন স্থল সীমান্ত চুক্তি হওয়ার প্রশাসন ত্রাণ শিবিরের জন্য জমি দেখতে শুরু করে। ছিটমহল ও তার বাইরেও জমি দেখার কাজ চলছে। দিনহাটার মহকুমাশাসক মশালডাঙা ছিটমহলে গিয়ে জমি দেখেন। বিনিময় কমিটির সহ সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “ত্রাণ শিবির বা স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরিতে জমি নিয়ে কোনও অসুবিধে হবে না। স্বেচ্ছায় বিনে পয়সায় ছিটমহলের বহু মানুষ জমি দিতে চাইছেন। প্রশাসনিক আধিকারিকদের তাঁরা সে কথা জানিয়েছেন।”

মশালডাঙার বাসিন্দা বেলাল হোসেন প্রশাসনকে তাঁর দুই বিঘা জমি তুলে দেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, “আমি পুনর্বাসনের জন্য জমি দিতে চাই। ওপার থেকে যারা আসবেন, তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধের মধ্যে পড়তে না হয়, তা দেখার দায়িত্ব আমাদেরও।” প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিকাঠামো তৈরির কাজও শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে রাস্তা, বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের উপরে জোর দেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

Advertisement

গত শনিবার রাতে মশালডাঙা ছিটমহলে এক বাসিন্দার বাড়িতে হামলা করে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ছিটমহল বিনিময় কমিটির পক্ষ থেকে পুলিশ ক্যাম্প বসানোর দাবি করা হয়। ইতিমধ্যেই মশালডাঙায় পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে।পুলিশ সুপার জানান, আরও কোথায় পুলিশ ক্যাম্প বসানোর প্রয়োজন রয়েছে, তা তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। কমিটির দাবি, পোয়াতের কুঠি, বাকালির ছড়া, নলগ্রাম, করলা, শিবপ্রসাদ মুস্তাফি এবং বালাপুখুরি ছিটমহলে পুলিশ ক্যাম্প বসানোর দাবি করা হয়েছে। দীপ্তিমানবাবু আশঙ্কা করে বলেন, “কোনও ভাবেই যাতে দুষ্কৃতীরা গোলমাল পাকাতে না পারে, সে জন্য পুলিশ ক্যাম্প বসানোর দাবি করেছি। একটি চক্র ছিটমহলে গণ্ডগোল পাকাতে সক্রিয় রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন