ভক্ত মাঝে দেব। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
কোথায় গেলেন নায়ক দেব! আক্ষেপ করছেন দেব ভক্তরা।
পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারে এসেও দিব্য নাচতেন, গাইতেন। ভক্তদের আবদার মেটাতেন। এ বারের ভোটে প্রার্থী হয়ে এখনও পযর্ন্ত বেশ কিছু কর্মিসভা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দেখা মেলেনি সাধের ‘পাগলু’র। এ বারের দেব যেন বড়বেশি সংযমী। আগে হাত যে দেব হাত নেড়ে অভিবাদন গ্রহণ করতেন, তিনিই এখন ঘুরছেন করজোড়ে।
বৃহস্পতিবার দাসপুরের পলাশপাইয়ের সভায় এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মামণি মান্না। কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী মামণির কথায়, “আমাদের সাধের নায়ক যেন হারিয়ে গিয়েছে। এ তো পুরদস্তুর সাংসদ দেব।” সাংসদ দেবকে দেখে কিছুটা হলেও হতাশ স্থানীয় বাসিন্দা তনিমা সরকার। তাঁর আক্ষেপ, “নায়ককে দেখতে গিয়েছিলাম। সাংসদকে দেখে ফিরলাম। প্রচারে এসে নাচলে-গাইলে ক্ষতি কী? ও তো তো আমাদের আদরের নায়ক।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০১৪ সালে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে দীপক অধিকারী ওরফে দেবকে প্রার্থী করে চমকে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উচ্ছ্বাসে ভেসেছিলেন তরুণ-তরুণীরা। খুশি হয়েছিল শিশুরাও। প্রচারে এসে বিপুল আশা জাগিয়েছিলেন দেবও। কখনও পাগলু ড্যান্সের সঙ্গে নাচ, কখনও ছবি তোলা। মঞ্চ থেকে সরাসরি জনতার সামনে এসে হাতে হাত মেলানো। হাসিমুখে অনেকের প্রশ্নের উত্তরও দিতেন তিনি। মাঝে মধ্যেই বলতেন, “আপানার ভাল আছেন তো?”সে সবই যেন হারিয়ে গিয়েছে। কিছু ভক্ত চাইছেন, পুরনো দেবকে। কিছু ভক্তের মত, দেব রাজনীতিক এবং নায়ক দুটোতেই পারদর্শী হোক।
তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা, দেবের এই পরিবর্তন আকস্মিক নয়, কিছুটা সচেতন ভাবেও করা। পাঁচ বছর কেউ সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাঁর মধ্যে রাজনীতির ভাষা আসাই স্বাভাবিক। দেব নিজেও বলেছেন, ‘‘এই পাঁচ বছরে আমি অনেক শিখেছি।’’ এ বার জিতলে যে আরও নতুন ভাবে তাঁর দেখা মিলবে তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, “দেব সভাতে গিয়ে হাতও নাড়ছেন। ভক্তদের আবদারও মেটাচ্ছে। পাশাপাশি রাজনীতির কথাও বলছেন। সাড়াও মিলছে ভাল।” শুক্রবার ঘাটাল থানার ভগীরথপুর এবং দাসপুরের কলোড়ায় দু’টি কর্মিসভা করেন দেব। দু’টি সভাতেই ভক্তদের ভিড় ছিল ভালই। মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য। ভগীরথপুরে অন্য দিনের তুলনায় ভক্তদের সঙ্গে বেশি কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে কলোড়ায় দিনের শেষে কিছুটাই হতাশ হয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে পাগলুর ভক্তদের। নিরাশ স্কুল পড়ুয়ারাও। তাদের বক্তব্য, “দেব কাকু এখন একটু কম হাসছে।’’
দেব অবশ্য বলছেন, “আমার সভায় সব ধরনের লোকই থাকে। ভক্তদের নিয়েই তো আমি বেঁছে আছি। তবে এই বিষয়টি আগামী দিনে খেয়াল রাখব।”