বিড়ি মহল্লা আগে ভরসা করত লাল পার্টিকে তারা এখন দিশেহারা।
বামুহা গ্রামের সাবিনা বিবির কথায়, ‘‘ভোট আসে। ভোট যায়, আমাদের দিন বদলায় না।’’ তাঁরা স্বামী-স্ত্রী মিলে হাজার দেড়েক বিড়ি বাঁধেন। বাড়িতে ৬টা পোষ্য। দুশো টাকা আয় হয়। কিভাবে সংসার চালাবেন তা নিয়েই দিন আনি দিন খাই সংসারের একমাত্র চিন্তা।
যে বিড়ি মহল্লা আগে ভরসা করত লাল পার্টিকে তারা এখন দিশেহারা। তেনাউড়ির সুমেদ সেখের সাফ কথা, “বিড়ি মালিকেরা এখন অনেকেই অন্য ব্যবসায় নেমেছেন। বুঝতে পারছি বিড়ি শিল্পের আয়ু কমে আসছে। কিন্তু এত সংখ্যায় বিড়ি শ্রমিকের কি হবে কেউ ভাবছেন না।’’ শাসক দলের মিছিলের দিকে তাকিয়ে রুকুন বেওয়ার আক্ষেপ, “গিয়ে দেখুন মিছিলে একটাও বিড়ি শ্রমিক খুঁজে পাবেন না। অথচ এক সময় ৩ টাকা মজুরি বাড়ানোর জন্য ছেলেরা পুলিশের লাঠি খেয়েছে, জেলে গেছে। প্রণববাবু এলেন। মন্ত্রী হলেন। বিড়ি মালিক জাকির এলেন, মন্ত্রী হলেন। আশায় বুক বাঁধলাম, বিড়ি শ্রমিকদের জন্য এ বার কিছু হবে। কিন্তু অবস্থা যে কে সেই।’’ শ্রমিকদের এই ক্ষোভকে উস্কে দিতে বিড়ি মহল্লা জুড়ে পোস্টারে ছয়লাপ দেওয়াল।
রাজ্য আইএনটিইউসির বিড়ি ফেডারেশনের আহ্বায়ক বাদশার আলি বলছেন, “কেরালায় বিড়ি শ্রমিকেরা মজুরি পায় ৩৪৫ টাকা হারে। তামাকের সবচেয়ে বড় রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাত সর্বত্র ৩০০ টাকার উপরে মজুরি। জঙ্গিপুর ১৫২। সরকারি ন্যুনতম মজুরির চেয়ে প্রায় ১০০ টাকা কম। বিড়ির বিক্রি কমেছে, তাই নাকি শ্রমিকদের কাজ দেওয়া যাচ্ছে না। হিসেব কিন্তু তা বলে না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অরঙ্গাবাদ বিড়ি মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজকুমার জৈন বলছেন, “বিড়ির বিক্রি গত এক বছর থেকেই কমছে। জঙ্গিপুরের বিড়ির বিক্রি গত ৬ মাসের ৪০ শতাংশের উপরে কমেছে। ফলে শ্রমিকদের কাজ অর্ধেক কমেছে। ১৫২ টাকা মজুরি কোনো বড় বিড়ি কোম্পানী দিচ্ছে না তা নয়। তবে আশপাশের গ্রামাঞ্চলে কোনো কোনো ঠিকাদার ২০/৩০ টাকা করে কম মজুরি দিয়ে বিড়ি বাঁধাচ্ছেন।’’