প্রতীকী চিত্র
নির্বাচনী বিধি ভেঙে পাট্টার ফর্ম বিলির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির অভিযোগ, ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পরেও কল্যাণীর মাঝেরচরের কোঙারনগর-বি, ভুট্টাবাজার, পাহিরাপাড়ায় পাট্টার ফর্ম বিলি করা হয়েছে। ভোট পেতেই শাসকদলের কিছু নেতা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তাদের দাবি।
এ ব্যাপারে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার স্বাস্থ্য সেলের আহ্বায়ক কৃষ্ণ মাহাতো সোমবার কল্যাণী মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। তাঁর অভিযোগ, গত ১৯ এপ্রিল স্থানীয় কাউন্সিলর ভক্তিভূষণ রায় পথসভা করে পাট্টা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পরের দিন থেকেই আদিবাসী ও অ-বাঙালি পাড়ায় ফর্ম বিলি করা হয়েছে। এতে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে। কৃষ্ণ বলেন, ‘‘দলিল দেওয়ার কাজ করার কথা প্রশাসনের। কিন্তু এখানে ভক্তিভূষণ রায়ের নেতৃত্বে ভোট পাওয়ার জন্য মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু বছর ধরে ভুট্টাবাজারে জনবসতি গড়ে উঠলেও বহু মানুষের জমির দলিল নেই। একই চিত্র কোঙারনগর-বি ও পাহাড়িপাড়া এলাকাতেও। বিজেপির অভিযোগ, দিন কয়েক আগে ভুট্টবাজারে তৃণমূল যে পথসভা করে, সেখানে স্থানীয় কাউন্সিলর ভক্তিভূষণ রায় পাট্টা দেওয়া নিয়ে দীর্ঘ বক্তৃতা করেন। তার পরেই ওই পাট্টার ফর্ম বিলি শুরু হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, তৃণমূলের ওই সভার পরই একটি আবেদনপত্র তাঁদের দেওয়া হয়। আবেদনপত্রের বিষয় লেখা হয়েছে— ‘জবরদখল জমির দলিল প্রদান’। এই ফর্ম পেয়েছেন এমন এক ব্যক্তি জানালেন, ফর্মে তাঁদের অধুনা পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ)-এর কোনও গ্রাম থেকে কবে এসেছেন তা জানাতে বলা হয়েছে। উদ্বাস্তু প্রমাণপত্র, এফিডেবিট ও ঠিকানার প্রমাণপত্রও দিতে বলা হয়েছে।
তবে পাট্টার এ হেন ফর্ম বিলি বা সেই সম্পর্কিত প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে বিন্দুবিসর্গ জানে না প্রশাসন। কল্যাণীর মহকুমাশাসক ইউনিস রিসিন ইসমাইল বলেন, ‘‘ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার হওয়ার পর থেকে এ ধরনের সব কাজ বন্ধ। এটা করাও যায় না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যদি পাট্টার ফর্ম বিলি করা হয়ে থাকে তবে কে বা কারা এই আবেদনপত্র বিলি করছেন তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’
আর, কল্যাণী শহর তৃণমূলের সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার আগেই আবেদনপত্রগুলি বিলি করা হয়েছে।’’ ভক্তিভূষণের দাবি, ‘‘দলিল পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র পূরণের কাজ চলছে।’’