নালিশ মুকুলের, বিবেক-বৈঠক ছাড়লেন সিইও

একাধিক বার সিইও-সহ তাঁর দফতরের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৩১
Share:

বিবেক দুবে। —ফাইল চিত্র।

আগেই তাঁর নামে নালিশ করা হয়েছে অনেক। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) আরিজ আফতাবের বিরুদ্ধে আবার অভিযোগ তুলল বিজেপি। রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সোমবার সকালে পৃথক পৃথক ভাবে বৈঠক করেন রাজ্যের বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আফতাবও। কিন্তু বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষকের কাছে বৈঠক থেকে আফতাবকে সরানোর দাবি জানায় বিজেপি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ওই দাবি ওঠার পরেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান আফতাব।

Advertisement

একাধিক বার সিইও-সহ তাঁর দফতরের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিজেপি। বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষকের সঙ্গে দেখা করে বেরোনোর পরে মুকুল রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষকের সঙ্গে একা কথা বলব। বাংলার মানুষের ধারণা, সিইও নিরপেক্ষ নন। তাঁর উপস্থিতিতে কথা বললে তা সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্য সরকারের কাছে চলে যাবে।’’ এই দাবির পরে সিইও সেখান থেকে চলে যান বলে জানায় বিজেপি। পরে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বলেন, ‘‘আমরা আমাদের কাজ করছি।’’ একই বক্তব্য অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সঞ্জয় বসুর।

ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের এক জায়গায় একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয় রাস্তার ফুটপাত দখল করে রয়েছে। তা নিয়ে বিজেপি একাধিক বার অভিযোগ করলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে জানান মুকুল। তাঁর দাবি, এ ক্ষেত্রে সিইও ‘অসহায়তা’ প্রকাশ করেছেন। সিইও দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছে, এ-সবের কোনও প্রশ্নই নেই।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সিইও-র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কমিশনের নির্দেশ স্থানীয় প্রশাসন মানছে না। সিইও-কে অভিযোগ জানিয়েও ফল হচ্ছে না। তিনি রাজ্য সরকারের খিদমতগারি করছেন।’’

বিজেপি যখন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষকের কাছে অভিযোগ করছে, তার অব্যবহিত আগে বিবেকের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের তাপস রায়, শুভাশিস চক্রবর্তী জানান, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল। তাঁদের মতে, রাজ্যের মানুষ ভাল আছেন। কমিশন যেন তৃণমূল স্তরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নেয়। ভুয়ো খবর ছড়িয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে তৃণমূল নেতারা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন? কোনও কিছুতেই আমাদের আপত্তি নেই।’’ তাপসবাবু বলেন, ‘‘কেউ বলছেন, আধা-সামরিক বাহিনীকে বলব পায়ে গুলি না-করে বুকে গুলি করুন। কেউ বলছেন পাল্টা মারের কথা। এমন একটা ধারণা তৈরি হচ্ছে, যেন কমিশন বিজেপির কথায় চলছে!’’ বিবেকের কাছে এনআরসি বা নাগরিক পঞ্জি নিয়ে অমিত শাহের মন্তব্য, মেদিনীপুরে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ এবং এবং বসিরহাটে ওই দলের প্রার্থী সায়ন্তন বসুর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগও জানিয়েছে তৃণমূল।

সিইও সম্পর্কে বিজেপি ক্ষোভ প্রকাশ করলেও কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সিইও চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁর কথা ডিএম-এসপি-রা শুনবেন কে?’’ বিবেকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিপিএমের তরফে বলা হয়, ‘‘গত বারেও সুধীর রাকেশ বড় বড় কথা বলেছিলেন। আমরা আশ্বস্ত হয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্যবাসী হিসেবে পরে দুঃখ পেয়েছিলাম। এ বার তার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে আশা করছি। আমরা আস্থা রাখছি।’’

এ দিন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক ‘ইতিবাচক’ বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন বিবেক দুবে। তিনি বলেন, ‘‘সব দল সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement