শাহনওয়াজ হুসেন ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
এক ধাপ এগিয়ে ‘সোনা-কাণ্ডে’ বিজেপি এ বার সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলল। সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততা বিখ্যাত। তা হলে ওঁর পরিবারের সততা নেই কেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জবাব দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য সরকার নির্বাচিত হয়েছে, নাকি তাঁর পরিবারের সুরক্ষার জন্য।’’ বিজেপির অভিযোগ, মমতার ভাইপো ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীর সঙ্গে সাতটি সুটকেস ছিল। যা খুলতে বিমানবন্দরে শুল্ক অফিসারদের বাধা দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততার প্রমাণ বিজেপির কাছে দিতে হবে না। জগৎ তা জানে। আর মমতার কাছে জনগণই ওঁর পরিবার। তাঁদের সুরক্ষার জন্যই উনি সব সময় আছেন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘সাহস থাকলে বিজেপির ওঁরা বাংলায় এসে এ সব বলুন। বাংলার মানুষ বুঝে নেবে। নীরব মোদী, বিজয় মাল্যর মতো হাজার হাজার কোটি টাকার লুটেরাদের যারা বিদেশে পালানোর সুযোগ করে দেয়, তাদের মুখে এ সব কথা মানায় না।’’
অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা গত ১৫ মার্চ মধ্যরাতের পরে ব্যাঙ্কক থেকে ফেরার সময়ে তাঁর সুটকেসে ‘বিধিবহির্ভূত’ সোনা আছে বলে কলকাতা বিমানবন্দরে শুল্ক দফতর তাঁকে ও তাঁর এক মহিলা সঙ্গীকে আটকায়। অভিযোগ, এর পর পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা বিমানবন্দরে গিয়ে শুল্ক অফিসারদের সঙ্গে বাদানুবাদ করেন। অবশেষে রুজিরা ও তাঁর সঙ্গী বেরিয়ে আসেন। ঘটনাটি কোথাও নথিভুক্ত হয়নি বলেও অভিযোগ। যদিও ঘটনার সাত দিন বাদে শুল্ক দফতর থেকে বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সোমবার নির্বাচন কমিশনও এ সম্পর্কে রিপোর্ট চেয়েছে।
রবিবার অভিষেক সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘এর পিছনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, দু’কেজি দূরের কথা, তাঁর স্ত্রীর ব্যাগ থেকে দু’গ্রাম সোনা পাওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। এই ঘটনা সামনে রেখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে অন্য বিরোধী দলও। অভিষেক তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, শুল্ক
দফতর কেন সাত দিন পরে এফআইআর করল? কেন ঘটনাস্থলেই রুজিরাকে আটক করে সোনা বাজেয়াপ্ত করল না? শুল্ক দফতরের গণ্ডি পেরিয়ে আসার পরে কার ব্যাগে কী ছিল, তা প্রমাণ হবে কী করে, সে প্রশ্নও ওঠে। ভিডিয়ো ফুটেজ থাকলে সাত দিনের মধ্যে তা প্রকাশ্যে এল না কেন, প্রশ্ন সেখানেও। শুল্ক দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হলেও এখনও এ সবের জবাব মেলেনি। যদিও অভিষেক রবিবারেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি সব রকম তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।