গণ্ডগোলের পর পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি পিটিআই।
রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটে গোলমালকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবেই দেখছে নির্বাচন কমিশন।
রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) আরিজ আফতাবের মন্তব্য, নির্বাচন শান্তিপূর্ণই হয়েছে। ভোট নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ করেছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় ভি নায়েক। বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেরও তা-ই মত। দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন বলেন, ‘‘ভোট চলাকালীন সংঘর্ষের খবর আসামাত্র দ্রুত বাহিনী পাঠানো হয়েছে। তার পরেও কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।’’
এ দিন সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে বিক্ষোভ দেখান উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার ১৮০ নম্বর বুথ মির্দাগছ প্রাথমিক স্কুলের ভোটাররা। লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। ওই ঘটনার পরে প্রায় ১৫০ বাসিন্দা ভোট না-দেওয়ার কথা বলেছিলেন। পরে অবশ্য তাঁরা ভোট দেন বলে জানান সিইও।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কমিশন একে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করলেও প্রতিবাদে সরব বামেরা। তাদের অভিযোগ, বুথ থেকে বিরোধী এজেন্টদের বার করে দিয়ে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিল শাসক দল। সেই খবর করতে গেলে সাংবাদিকদের মারধর করা হয়। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘নির্মম ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে সাংবাদিকদের। অভিযোগ করে লাভ হচ্ছে না।’’ ইসলামপুরের একটি বুথে ছাপ্পা ভোটের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে রায়গঞ্জের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে মামলা শুরু হবে বলে জানান এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত। তবে একটি সূত্রের দাবি, গাড়ি ভাঙচুরের সময়ে সেলিম গাড়িতে ছিলেন না।
বামেদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ঠিক ভাবে হয়নি। এই প্রসঙ্গে সিইও আফতাবকে পাশে বসিয়ে সিদ্ধিনাথ জানান, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পর্যবেক্ষকদের আলোচনার ভিত্তিতে বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিষয়গুলি পর্যবেক্ষকেরা দেখে থাকেন। আর সুদীপ জৈনের মন্তব্য, ‘‘প্রতি বুথে আধাসেনা দেওয়া সম্ভব নয়। সেটা কমিশনের লক্ষ্যও নয়।’’
গোলমাল নিয়ে বামেদের সঙ্গে অবশ্য একমত নয় আর এক বিরোধী দল বিজেপি। প্রথম দফায় একাধিক বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি করলেও এ দিনের ভোট ‘ভালই’ হয়েছে বলে জানান বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েকটি বিক্ষিপ্ত গোলমাল ছাড়া ভোট ভালই হয়েছে। কমিশনের ভূমিকা ধীরে ধীরে ভাল হচ্ছে।’’
রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গার ছোট ছোট ব্যাপার। ফলে চোপড়া নিয়ে যে গেল গেল বলা হচ্ছে, তা নয়। ভালই ভোট হয়েছে।’’
এ দিন উত্তর দিনাজপুর চারটি, কালিম্পংয়ে তিনটি ও জলপাইগুড়িতে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরে এক জন এবং কালিম্পংয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।