কংগ্রেস নিরুত্তর, আজ বৈঠকে বাম

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকে বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা জানিয়ে দিয়েছিলেন, রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য দলের অন্দরের দাবি অস্বীকার করা সম্ভব হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০০:৩৪
Share:

বাকি ৩৬টি আসনের ভাগাভাগি কী ভাবে হবে, তা নিয়ে এ বার দলের অন্দরে অঙ্ক কষতে বসেছে সিপিএম ও কংগ্রেস।—ফাইল চিত্র।

কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্তের বল ঠেলে দিয়েছেন হাইকম্যান্ডের কোর্টে। কিন্তু হাইকম্যান্ড চূড়ান্ত কোনও সূত্র দলের রাজ্য নেতৃত্ব বা সিপিএম— কাউকেই এখনও জানায়নি। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের জন্য কিছু আসন ছেড়ে রেখে নিজেদের পরিকল্পনা আজ, শুক্রবারই সেরে ফেলতে চাইছে বামফ্রন্ট।

Advertisement

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকে বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা জানিয়ে দিয়েছিলেন, রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য দলের অন্দরের দাবি অস্বীকার করা সম্ভব হচ্ছে না। ওই দুই আসনে চতুর্মুখী লড়াইয়ে তাঁরা প্রস্তুত। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার রাহুলের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন তাঁরা। দিল্লিতে আপ বা কর্নাটকে জেডিএসের সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে যেমন, বাংলা নিয়েও সে ভাবে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে কংগ্রেস সভাপতিকে। নিজে বার্তা বিনিময়ের পরে রাহুল বুধবার রাতেই সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির কাছে পাঠিয়েছিলেন বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈকে। সেই আলোচনার পরে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের তরফে কোনও সঙ্কেত পৌঁছয়নি সিপিএমের কাছে।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাদের গত বারের জেতা রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন ছাড়া যাবে না। রাহুল ও গৌরবকে সেই কথাই জানিয়ে দিয়েছেন ইয়েচুরি। বলে দেওয়া হয়েছে, ওই দুই আসনের জট কাটলে তবেই বাকি আসনগুলি নিয়ে রফা চূড়ান্ত হওয়া সম্ভব। রায়গঞ্জ কেন্দ্রের দাবিদার দীপা দাশমুন্সির জন্য বিকল্প সূত্রের খোঁজও শুরু হয়েছে কংগ্রেসে। কিন্তু তার কোনওটাই বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মসৃণ হয়নি। সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আমাদের তরফে যা বলার, স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব ভোটকে এক জায়গায় আনাই আমাদের উদ্দেশ্য। সেই অভিন্ন লক্ষ্যে সাড়া না মিললে তখন আমাদের অন্য পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে।’’

Advertisement

বাম সূত্রের খবর, কিছু আসন কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে রেখে বাকিগুলির জন্য প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত আজই নেওয়া হতে পারে ফ্রন্টের বৈঠকে। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হলেই সেই আসনগুলিতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দেবে বামেরা। কংগ্রেসের মনোভাব বুঝে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় ঘোষণা করা হবে বাকি আসনের প্রার্থী তালিকা। এর মধ্যে কংগ্রেস সমঝোতায় এগিয়ে এলে বোঝাপড়ার আসনগুলিতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পথে আর যাবেন না বাম প্রার্থীরা।

কংগ্রেসের অন্দরেও প্রশ্ন উঠেছে, একটি-দু’টি আসনের টানাপড়েনের জন্য গোটা সমঝোতা ভেস্তে যেতে পারে দেখেও প্রদেশ নেতৃত্ব কেন নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না? সাম্প্রতিক অতীতে ২০০৯ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে তৃণমূলের সঙ্গে জোট, ২০১১ সালে মানস ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে তৃণমূলের সঙ্গে জোট, ২০১৪ সালে অধীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে একা লড়া এবং ২০১৬ সালে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা— সব ক্ষেত্রেই কংগ্রেসের একাংশের ভিন্ন মত ছিল। কিন্তু তাতে সিদ্ধান্ত আটকে যায়নি। এখন প্রদেশ নেতৃত্বের যুক্তি, ‘সবাইকে নিয়ে চলা’র নীতি বজায় রেখেই সোমেন মিত্র সিদ্ধান্তের ভার দিল্লির উপরে ছেড়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন